পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: দেশের মধ্যে বাঘের রাজ্য এই শিরোপা কি হারাতে চলেছে মধ্যপ্রদেশ। ২০২২ সালে মধ্যপ্রদেশে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৩৪টি বাঘ। সেখানে কর্নাটকে একই বছরে বাঘের মৃত্যু হয়েছে ১৫টি। এর ফলেই এই হেন আশঙ্কা জন্ম নিয়েছে।বাঘ সুমারিতে এই তথ্য উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় বনমন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ২০২৩ সালের শেষ দিকে এই পরিসংখ্যান করা হবে।
প্রতি চারবছর অন্তর দেশে বাঘসুমারি অনুষ্ঠিত হয়, শেষবার সুমারি হয় ২০১৮ সালে। বন বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই সুমারিতে দেখা যায় মধ্যপ্রদেশ এবং কর্নাটকে প্রায় সমসংখ্যক বাঘ রয়েছে। ২২ এর বাঘ সুমারি বলছে কর্নাটকের চেয়ে দ্বিগুণ সংখ্যক বাঘের মৃত্যু হয়েছে মধ্যপ্রদেশে।
২০১৮ সালের গণনায় দেখা গিয়েছিল, মধ্যপ্রদেশে বাঘের সংখ্যা ছিল ৫২৬। আর কর্নাটকে বাঘের সংখ্যা ছিল ৫২৪।
দেশের দুই রাজ্য মধ্যপ্রদেশ এবং কর্নাটকে মোট কত বাঘের প্রাণহানি হয়েছে তার পরিসংখ্যান ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি (এনটিসিএ)-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। তবে ওয়েবসাইটে মৃত্যুর কোন কারণ দেখানো হয়নি।
কেন্দ্রীয় পরিবেশ, জলবায়ু বন মন্ত্রকের অধীন এনটিসিএর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, ২০২২ সালে সারা দেশে ১১৭টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের মুখ্য বন সংরক্ষক জেএস চৌহান সংবাদসংস্থাকে জানান এইটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যবশত বিষয় যে কর্নাটকের থেকে আমাদের রাজ্য মধ্যপ্রদেশে বেশি সংখ্যক বাঘের মৃত্যু হয়েছে। বাঘের দেহগুলি দেখা হয়েছে, ময়নাতদন্তও করা হয়েছে। সঠিক কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা চলছে। চৌহান আরও বলছেন মধ্যপ্রদেশে যে বাঘগুলি প্রাণ হারিয়েছে সেগুলি কিন্তু বেশিরভাগই পরিনত বয়সের। মনে রাখতে হবে একটি বাঘ সর্বোচ্চ বাঁচতে পারে ১২ থেকে ১৮ বছর। সেইদিক থেকে দেখলে এই ঘটনা খুব বেশি অস্বাভাবিক নয়। মধ্যপ্রদেশে ৪০টি পর্যন্ত বাঘের মৃত্যু হতে পারে। পরিসংখ্যান বলছে ২০২১ সালে সারাদেশে যেখানে ১২৭টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে সেখানে মধ্যপ্রদেশেই মারা যায় ৪২ টি বাঘ।
এইরাজ্যেই আছে – কানহা, বান্ধবগড়, পেঞ্চ, সাতপুরা, পান্না এবং সঞ্জয়-দুবরি বাঘের জন্য সংরক্ষিত মোট ৬টি অভ্যারণ্য। মধ্যপ্রদেশে বার্ষিক প্রায় ২৫০ ব্যাঘ্র শাবকের জন্ম হয়।
পরিসংখ্যান মোতাবেক ২০২২ সালে মধ্যপ্রদেশে রেকর্ড করা ৩৪টি বাঘের মৃত্যুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল বান্ধবগড় টাইগার রিজার্ভ। যেখানে একবছরের মধ্যে নয়টি বাঘ মারা গিয়েছিল, তারপরে পেঞ্চ (পাঁচটি) এবং কানহা (চারটি)। ২০১৪ সালের বাঘ শুমারি অনুযায়ী উত্তরাখণ্ড (৩৪০) এবং কর্নাটক (৪০৬) এর পরে মধ্যপ্রদেশে বাঘের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০৮। তৃতীয় স্থানে নেমে যায় মধ্যপ্রদেশ। ২০১৮ সালে সেই হৃতসন্মান পুনরুদ্ধার করে মধ্যপ্রদেশ।সেখানে বাঘের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২৬, কর্নাটকে ৫২৪ এবং উত্তরাখন্ডে ৪৪২টি । উল্লেখ্য ২০০৬ সালে বাঘরাজ্যের শিরোপা পায় মধ্যপ্রদেশ। ২০১০ এই রাজ্য ফের স্থানচ্যুত হয়। ২০১৮ তে হারানো স্থান ফিরে এলেও ২০২২ কি ফের সেই স্থান হারাবে মধ্যপ্রদেশ। এখন সেটাই দেখার। ভারতে আনুমানিক বাঘের সংখ্যা ২০০৬ সালে ছিল ১৪১১। তা থেকে বেড়ে ২০১৮ সালে ২৯৬৭ হয়েছে বলছে বাঘসুমারির রিপোর্ট