পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ ফের একবার সোয়াইন ফ্লু আতঙ্কে ভুগছে দেশ। গত দুই দিনে মধ্যপ্রদেশের দামোহ জেলায় ৭০০ টির বেশি শূকর অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। মৃত শূকর গুলিকে মাটির নীচে চাপা দেওয়া হয়েছে বলেই পশুপালন দফতরের আধিকারিক সূত্রে খবর। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে যখন দামোহ জেলার হাতা ব্লকে হঠাৎ এক প্রাণীর মৃত্যু হয়। তারপর এক সপ্তাহের মধ্যে বানাওয়ার জেলায় ১০০ টিরও বেশি শূকর, গরু, ষাঁড় সহ একাধিক পশু মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এই প্রসঙ্গে পশু চিকিৎসক সোমিল রায় বলেন, এই দুই এলাকায় সোয়াইন ফ্লু মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। এমনকি সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে এই রোগ।
সম্প্রতি প্রকাশিত হওয়া এক সমীক্ষা অনুযায়ী, গত বছরের নভেম্বর মাসে রাজ্যের কাটনি জেলায় ১৫ দিনের মধ্যে সোয়াইন ফ্লু’তে আক্রান্ত হয়ে ৮৫ টির শূকর মারা গেছে। অন্যদিকে মুদুমালায় টাইগার রিজার্ভে আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লু’তে সংক্রমিত হয়ে কমপক্ষে ৫০ টিরও বেশি শূকর মারা গেছে। ৫ জানুয়ারি তামিলনাডুর নীলগিরি জেলা কালেক্টর এস পি অমৃত একটি বিবৃতি জারি করে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিন তিনি আরও বলেন, তামিলনাড়ুর সীমান্তবর্তী কর্নাটকের বান্দিপুর এলাকা ছাড়াও বিগত ১০ দিনে কোঠাগিরি, কেলকোঠাগিরি, কুন্নুর, মঞ্জুর এবং উটিতে কয়েকটি বুনো শূকর মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ২৫ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ২৪ টি শূকরের মৃত্যু হয়েছে। সবগুলিই মাসিনাগুড়ি, কারকুডি এবং থেপ্পাকাদু বনাঞ্চলের ৫০০ মিটারের মধ্যে মারা গেছে।
এই এলাকা গুলি স্থানীয়দের কাছে মূলত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও বেশ কিছু আদিবাসী সম্প্রদায় ওই এলাকায় বসবাস করে। ঘন ঘন শূকরের মৃত্যুর ঘটনায় ও আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লু রোগটাকে বিশেষ ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে চেন্নাই থেকে একটি বিশেষ দল নীলগিরি পরিদর্শনে যাচ্ছে। এরা মূলত অ্যান্টি-পাচিং স্কোয়াড নামে পরিচিত। তারা শূকরের মৃতদেহ সংগ্রহ ও পুড়িয়ে দেওয়ার কাজের সঙ্গে যুক্ত।
এই প্রসঙ্গে বন সংরক্ষক এবং এমটিআর-এর ফিল্ড ডিরেক্টর ডি ভেঙ্কটেশ সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই কর্মীদের মাঠে বর্জ্য পদার্থ, ও আবর্জনা ফেলতে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ বন্য শূকররা এই জিনিসগুলির প্রতি আকৃষ্ট হয়। বান্দিপুর টাইগার রিজার্ভের এক আধিকারিক এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, সংক্রমিত শূকর গুলির ব্যবহৃত জল ও অন্যান্য কার্যকলাপের মাধ্যমে এই রোগটি সর্বত্রে ছড়িয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, বান্দিপুর টাইগার রিজার্ভ ও এমটিআর (মুদুমালায় টাইগার রিজার্ভে) একে অপরের থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত। সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জা বা সোয়াইন ফ্লু শূকরের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। এই রোগের কোনও ওষুধ নেই। এই রোগে সংক্রমিত হলে মৃত্যু অনিবার্য। এটি প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয় না। যেহেতু সোয়াইন ফ্লু র কোনও টিকা নেই তাই কোনও এলাকায় এই রোগে আক্রান্ত হয়ে কোনও পশু মারা গেলে, সংক্রমণ রুখতে তাঁদের মাটির নীচে চাপা দেওয়া হয়।