পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ ১৯৯১ সালের ১২ জুলাই উত্তরপ্রদেশের পিলভিটে এগারো শিখকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। পরে অবশ্য পুলিশ এই খুনকে এনকাউন্টার বলে চালানোর চেষ্টার কসুর করেনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হয়, সেটি ছিল আসলে ভুয়ো সংঘর্ষ। পুলিশের সন্দেহ ছিল যে, এই এগারো জন নিষিদ্ধ এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী খলিস্তান লিবারেশন ফ্রন্টের সদস্য। একত্রিশ বছরের সেই পুরনো ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় ৪৩ জন পুলিশ আধিকারিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনাল এলাহাবাদ হাই কোর্ট। বিচারপতি রমেশ সিনহা এবং বিচারপতি সরোজ যাদবের ডিভিশন বেঞ্চ ১৯৯১ সালের পিলভিট ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় এই রায় দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ এ ইউপির তখতে ছিল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন কল্যাণ সিং। তাঁর জমানতেই ভাঙা হয়েছিল বাবরি মসজিদ। এই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট ১৯৯২ সালের ১৫ মে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। তদন্তকারী সংস্থা এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করলে, নিম্ন আদালত ৫৭ জন পুলিশকর্মীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়।
অভিযুক্তরা নিম্ন আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করেন। হাই কোর্ট ৪৩ জন অভিযুক্তের সাজা বহাল রাখল। ১৯৯১ সালের ১২-১৩ জুলাই এর মাঝরাতে পিলভিটে এগারো জনকে একটি বাস থেকে তুলে বিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। খালিস্তান লিবারেশন ফ্রন্টের লোক মনে করে তাদের এনকাউন্টার করা হয়। একজনের মৃতদেহ অবশ্য উদ্ধার হয়নি। উদ্ধার হয়েছিল ১০ তরতাজা তরুণের দেহ।
পুলিশ দাবি করছিল তারা আত্মরক্ষার্থে এই খুন করেছিল। যদি মেডিক্যাল রিপোর্ট পুলিশের সেই দাবিকে খারিজ করে দিয়েছে আগেই। পরে সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে সিবিআই তদন্ত হয়। সিবিআই প্রাথমিকভাবে ৫৭ জন পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। বিচার ও তদন্ত চলাকালীন ১৪ অভিযুক্তের মৃত্যু হয়। নিম্ন দায়রা আদালত এই পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার সাজা শোনায়। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপহরণ সহ একাধিক ফৌজদারি মামলা দেওয়া হয়। এলাহাবাদ হাইকোর্ট পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত হত্যা মামলার সাজা দিয়েছে।