বিশেষ প্রতিবেদন: ইয়েমেন যুদ্ধে ১১ হাজারেরও বেশি শিশু নিহত বা পঙ্গু হয়েছে। সোমবার রাষ্ট্রসংঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয় এ তথ্য। রাষ্ট্রসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ বলছে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানবিক সংকটে থাকা দেশটিতে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, ‘হাজার হাজার শিশু তাদের জীবন হারিয়েছে যুদ্ধে, আরও কয়েক লক্ষ শিশু স্বাস্থ্যগত কারণে রোগ বা অনাহারে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে।’
ইউনিসেফ বলছে, ‘২২ লক্ষের মতো শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে দেশটিতে। তাদের মধ্যে এক চতুর্থাংশের বয়স পাঁচ বছরের কম। বেশিরভাগই কলেরা, হাম এবং অন্যান্য প্রতিরোধযোগ্য রোগের চরম ঝুঁকিতে রয়েছে।’
২০১৪ সাল থেকে গত ৮ বছর ধরে চলা যুদ্ধের এক পক্ষে সউদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ও ইয়েমেন সরকার। অপরপক্ষে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা। যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়ে মারা গেছে শিশুরাও।
এর আগে রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞ প্যানেল জানিয়েছিল, হুথি বিদ্রোহীদের নিয়োগ করা ১,৪০৬ শিশুর একটি তালিকা পেয়েছে তারা। এসব শিশু যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হয়। তা ছাড়া পরোক্ষভাবে অনিরাপদ পানীয় জল, রোগের প্রাদুর্ভাব, ক্ষুধা ও অন্যান্য গুরুতর কারণে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে দেশটিতে।
সংস্থাটির সর্বশেষ প্রকাশিত রিপোর্টে ২০১৫ সালের মার্চ থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৩,৭৭৪ জন শিশুর মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। রাষ্ট্রসংঘের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতি গত অক্টোবর পর্যন্ত ছয় মাস স্থায়ী হয়। যদিও সেই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আর বাড়েনি।
ইউনিসেফ বলছে, সে সময় থেকে আরও ৬২ শিশু হতাহত হয়। ইউনিসেফ আরও বলছে, কয়েক বছর ধরে যুদ্ধে ৩,৯০৪ জনকে ছেলে শিশু নিয়োগ করা হয়েছে এবং ৯০ জনেরও বেশি মেয়ে শিশুকে চেকপয়েন্টে কাজ করাসহ বিভিন্ন ভূমিকা পালন করার জন্য নিযুক্ত করা হয়।
ইয়েমেনের মানবিক সংকট মোকাবিলায় ৪৮ কোটি ৪৪ লক্ষ ডলার সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ নবায়ন করা ইতিবাচক প্রথম পদক্ষেপ হবে। মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য সহায়ক হবে এটি। শুধু টেকসই শান্তিই যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিবারগুলোকে তাদের জীবন পুনরায় শুরু করার সুযোগ করে দেবে।’