পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ ইরানে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ও জার্মান রাষ্ট্রদূতকে ফের তলব করল ইরান। প্রায় তিন মাস ধরে চলমান হিজাব-বিরোধী বিক্ষোভের মধ্যে ইরান অন্তত ১৫ বার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের তলব করেছে। এর মধ্যে প্রায় সবাই পশ্চিমা দেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। চলমান হিজাব-বিরোধী বিক্ষোভের কারণে পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের মধ্যে রয়েছে ইরান। সেই নজিরবিহীন চাপের মধ্যেই ইরান তার কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া জানাল।
ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের ক্রমাগত হস্তক্ষেপ এবং তেহরানের বিরুদ্ধে লন্ডনের নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিবাদে ইরানে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত সাইমন শেরক্লিফকে তলব করে ইরানের বিদেশমন্ত্রক। একই ইস্যুতে তেহরানে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত হান্স-উডো মুজেলকেও তলব করা হয়। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে গত শুক্রবার ১০ ইরানি নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ব্রিটিশ সরকার।
এরপরই শনিবার দুই দেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হল। শনিবার ইরানের বিদেশমন্ত্রকের মহাপরিচালক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত শেরক্লিফকে বলেন, ইরানে দাঙ্গা চালিয়ে যেতে ব্রিটিশ সরকার ও গণমাধ্যমগুলো যে উসকানি দিয়ে যাচ্ছে তাতে কোনও ফল হবে না বরং ইউরোপের এই দেশটির প্রতি ইরানি জনগণের ক্ষোভ ও ঘৃণাই কেবল বাড়বে। তেহরানের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ সরকারের নতুন নিষেধাজ্ঞার জবাবে ইরানও পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রাখে বলে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়।
এসময় ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপমূলক ও নির্লজ্জ মন্তব্যের পাশাপাশি ইরানের সাম্প্রতিক দাঙ্গা ও সন্ত্রাসবাদের প্রতি ব্রিটিশ সরকার ও গণমাধ্যমের সমর্থনের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। সেইসঙ্গে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের কাছে ইরানের একদল নাগরিকের বিরুদ্ধে লন্ডনের আরোপিত নিষেধাজ্ঞারও তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাতে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত তেহরানের প্রতিবাদ লন্ডনে পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
উল্লেখ্য, গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় ২২ বছর বয়সী কুর্দ তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। সেই বিক্ষোভ শুরুর পর ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত সাইমন শেরক্লিফকে অন্তত পাঁচবার তলব করেছে ইরান। ইরান সরকার এই বিক্ষোভকে ‘দাঙ্গা’ বলে অভিহিত করেছে এবং এসব দাঙ্গার পেছনে পশ্চিমা শত্রুদের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ইরান।