পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সমাজ একদিকে যখন আধুনিক, প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে উঠছে অন্যদিকে একটি অন্ধকার দিক ততই প্রকট হচ্ছে। বর্তমান সময়ে জাত-পাতের ধ্যানধারণা থেকে যে মানুষ যে এখনও বের হতে পারেনি, তার জলজ্যান্ত উদাহরণ তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুর গ্রাম। একটি ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, একজন বিক্রেতাকে। তিনি নির্দিষ্ট বর্ণের মানুষের মধ্যে পণ্য বিক্রি করতে অস্বীকার করেছেন। সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তার পরেই ওই বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তাঞ্জাভুর গ্রামের ওই বিক্রেতার পণ্য বিক্রি করার সময় তফশিলি জাতির মানুষদের পণ্য বিক্রি করতে অস্বীকার করেন। সিসি ক্যামেরায় এই ছবি ধরা পড়ে। সেই সূত্র ধরেই পুলিশ ওই বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে। তার দোকানটিকে সিল করে দেওয়া হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা তামিলনাড়ু তাঞ্জাভুর গ্রামের ওই বিক্রেতার কাছে এক ব্যক্তি পেট্রোল কিনতে এলে তিনি বলেন, গ্রামবাসীরা তাকে একটি নির্দিষ্ট বর্ণের মানুষের কাছে বিক্রি না করার নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, গত ২৮ নভেম্বর হিন্দুরা একটি পঞ্চায়েত ডাকে। সেই পঞ্চায়েতে তফশিলিদের ‘একঘরে’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তাদের কোনও ধরনের সামগ্রী বিক্রি করা যাবে না। সেই সঙ্গে তাদের চায়ের দোকান সহ সেলুন ব্যবহার করারও অনুমতি নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, দোকানের মালিক একজন হিন্দু। তিনি ক্রেতাকে বলছেন, গ্রামবাসীরা মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্দিষ্ট বর্ণের ব্যক্তিদের কাছে সামগ্রী বিক্রি করা যাবে না। তাই আমি বিক্রি করতে পারব না।
তাঞ্জাভুর জেলার পাপাকাডুর কাছে কেলামঙ্গলাম গ্রামের এই ঘটনা নিয়ে সমাজে শোরগোল পড়েছে।
বিদুথালাই চিরুথাইগাল কাচির সাংসদ রবিকুমার রাজ্যের তফশিলি জাতি-উপজাতি কমিশনের কাছে বিষয়টি তুলে ধরে রাজ্যে অস্পৃশ্যতা পালনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি চিঠি লিখেছিলেন।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তফশিলিদের ওপরে বৈষম্যের কারণেই এই ধরনের বিভেদ করা হয়েছে।
গ্রেফতার হওয়া দোকানদারের নাম ভিরামুখু। তফশিলি জাতি-উপজাতি নৃশংসতা আইনে তার বিরুদ্ধে পাঁচটি ধারায় মামলা করা হয়েছে।