পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি হিন্দি ভাষা নিয়ে বিগত কয়েকমাস ধরেই সোচ্চার হয়েছে কেন্দ্র সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে বেশ কিছু জনসভায় হিন্দি ভাষা নিয়ে সরব হতেও দেখা গেছে। কেন্দ্র সরকারের এই ‘হিন্দি আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে তামিলনাড়ু বিধানসভায় প্রস্তাব আনা হয়। কিন্তু এবার সেই রাজ্যেই হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দক্ষিণ রেলওয়ের বিরুদ্ধে।
এই ঘটনায় হিন্দি ভাষার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় মানুষ। স্টেশনে হিন্দি শব্দ ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে বলে প্রতিবাদ জানায় তারা। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হিন্দি শব্দ সরিয়ে ফেলার দাবিতে আন্দোলনও শুরু হয়।
এই অবস্থায় প্রবল চাপের মুখে অবশেষে স্টেশনের সাইনবোর্ড থেকে হিন্দি শব্দ সরিয়ে ফেলতে এক রকম বাধ্য হল দক্ষিণ রেল।
মূল ঘটনার সূত্রপাত হয় হয় ‘সহযোগ’ শব্দের থেকে। উৎপত্তিগতভাবে এটি একটি হিন্দি শব্দ, যার সঠিক অনুবাদ তামিল বা ইংরেজি ভাষায় করা সম্ভব নয়। তিরুপ্পুর স্টেশনে তিনটি ভাষাতেই এই শব্দটি লেখা ছিল। কিন্তু যে সমস্ত মানুষ হিন্দি বা ইংরেজি বোঝেন না, তারা এই শব্দের মানে বুঝতে পারেননি।
যাত্রীরা এই শব্দের ব্যবহার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সহযোগ’ শব্দটির যা অনুবাদ করা হয়েছে, সেটা বোঝা যাচ্ছে না। এই শব্দ স্টেশন থেকে সরিয়ে দিতে হবে, এই দাবিতে বিক্ষোভ দেখান রেলযাত্রীরা। এর মধ্যেই এক যাত্রীর বক্তব্য, জোর করে সাধারণ মানুষের ওপরে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। সাধারণ মানুষের সঙ্গে এই বিক্ষোভে শামিল হয় আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলিও।
প্রতিবাদে সরব হয় ভান্নিয়ার সম্প্রদায়ের পাট্টালি মাক্কাল কাটচি দল। দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এমন বহু মানুষ আছেন তারা হিন্দি বা ইংরেজি বোঝেন না। তাদের কথা ভেবেই তামিল শব্দ ব্যবহার করা উচিৎ।
এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে দক্ষিণ রেলের দাবি, দেশের নানা প্রান্ত থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা কাজের সূত্রে তামিলনাড়ুতে আসেন। তাদের সকলের পক্ষে তামিল বোঝা সম্ভব নয়, তাই হিন্দির ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে চাপিয়ে দেওয়ার কোনও বিষয় নেই। তবে সম্মিলিত প্রতিবাদের পরে ওই শব্দটি সরিয়ে দেয় দক্ষিণ রেল। ঘটনার পর থেকেই ‘সহযোগ’ শব্দটির কাছাকাছি অর্থের তামিল ও ইংরেজি শব্দ লেখা রয়েছে তিরুপ্পুর স্টেশনে।