পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : মেয়েদের শারীরিক সুরক্ষায় সচেতনতা প্রয়োজন, এই কথা বার বার বলে থাকেন চিকিৎসকেরা। ঋতুকালীন সময়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় মহিলাদের। ঋতুকালীন সমস্যা নিয়ে সচেতনতা প্রচারে বলিউডে তৈরি হয় ‘প্যাড ম্যান’ চলচ্চিত্র। এখনও বহু স্কুলে নেই সঠিক শৌচাগারের ব্যবস্থা, ফলে বাড়ছে মেয়েদের স্কুল ছুটের মতো সমস্যা।
স্কুলে মেয়েদের জন্য বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবস্থা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান এক সমাজকর্মী। সেই আবেদনের ভিত্তিতে কেন্দ্র, রাজ্য, কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলিতে নোটিশ পাঠালো সুপ্রিম কোর্ট।
ঋতুকালীন সময় মেয়েরা স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার না করে, অনেক সময় কাপড় ব্যবহার করে থাকে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। অনেক সময় আর্থিকভাবে স্বচ্ছল না হওয়া, অজ্ঞতা এর জন্য দায়ী। সচেতনতার অভাবে মেয়েদের শরীরে শারীরিক জটিলতা তৈরি হয়। এই কারণেই স্কুল ছাত্রীদের বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন দেওয়ার দাবি জানিয়ে আবেদন জানানো হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ নিল সুপ্রিম কোর্ট।
শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি পিএস নরসিমহার বেঞ্চ কেন্দ্র সহ সকল রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলিকে সমস্ত স্কুলে বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণের জন্য নোটিশ জারি করেছে।
উল্লেখ্য, ঋতুকালীন সমস্যায় বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণের জন্য আবেদন করেন এক সমাজকর্মী। এই মামলায় তিনি ৩২ নম্বর ধারার অধীনে সুপ্রিম কোর্টের এক্তিয়ার তুলে ধরেন। সেই আবেদনে প্রতিটি সরকারি, আবাসিক স্কুল ও সরকারি অনুদানে পরিচালিত স্কুলগুলিতে মেয়েদের জন্য আলাদা শৌচাগারের দাবি করেন। পাশাপাশি সেখানে যাতে সাফাই কর্মীরাও থাকেন সেই বিষয়েও সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এই আবেদনে আরও উল্লেখ করে জানানো হয়, মেনস্ট্রুয়াল হাইজিন ম্যানেজমেন্ট নিয়ে অপর্যাপ্ত ব্যবস্থা মেয়েদের শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। শৌচাগারের সমস্যা, স্যানিটারি ন্যাপকিনের অপ্রতুলতা, এমনকি ঋতুকালীন সমস্যায় প্রচলিত ধ্যান-ধারণার কারণেও লজ্জায় পড়তে হয় মেয়েদের। ফলে মেয়েদের স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়ছে।
এই মামলার গুরুত্ব পর্যবেক্ষণ করে শীর্ষ আদালত এই বিষয়ে নজর দেওয়ার জন্য ও সাহায্য করার জন্য সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতাকে অনুরোধ করেছে।
প্রসঙ্গত, আবেদনকারীর আইনজীবী বরুণ ঠাকুর আদালতে এক সেই রিপোর্ট জমা দেন। ‘দশরা’র সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, যথাযথ মেনস্ট্রুয়াল হাইজিন ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থা না থাকার কারণে প্রতি বছর ২৩ মিলিয়নের বেশি মেয়ে স্কুল ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। যা সমাজে একটি গুরুতর সমস্যা। এই মামলার গুরুত্ব অনুধাবন করেই কেন্দ্র, রাজ্য সরকার, কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলিকে নোটিশ পাঠাল শীর্ষ আদালত।