পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করলে ধর্ষণের অভিযোগ করতে পারেন না কোনও বিবাহিত মহিলা, চাঞ্চল্যকর রায় দিল কেরল হাইকোর্ট।
আদালত তার রায়ে জানায়, যদি কোনও পুরুষ কোনও বিবাহিত মহিলাকে বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন, তাহলে ধর্ষণের অভিযোগ করতে পারেন না সেই বিবাহিত মহিলা।
কেরলের কোল্লাম জেলায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করেন এক বিবাহিত মহিলা। এই মামলার ভিত্তিতেই এই রায় দেয় কেরল হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে ওই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়। এক মহিলা দাবি করেন, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার তাঁকে ধর্ষণ করেছেন অভিযুক্ত।
গত ২৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার, মামলাটি খারিজ করে দিয়ে কেরল হাইকোর্ট তার পর্যবেক্ষণে জানায়, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারার অধীনে ধর্ষণের অভিযোগ করা যায় না।
জানা গিয়েছে, অভিযোগকারিণী মহিলার সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হয় অভিযুক্ত যুবকের। দুজনের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। একসঙ্গে অস্ট্রেলিয়াতে বেড়াতেও যান তারা। সেখানে একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে দাবি অভিযোগকারিণীর। সেই সঙ্গে তিনি জানান, তার সম্মতিতেই শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিল দুজনের মধ্যে। অভিযোগকারিণীর আরও দাবি, বিয়ের প্রতিশ্রুতি পেতেই এই সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। তবে সেই সময় আইনত তিনি বিবাহিত ছিলেন। প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া চলছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি এক মহিলাকে বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় এবং ভারতে বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। ওই ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার সময় মহিলা বিবাহিত ছিলেন, কিন্তু স্বামীর সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না।
কেরল হাইকোর্টের বিচারপতি কওসর এদাপ্পাগথের এক বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, যখন কোনও বিবাহিত মহিলা স্বেচ্ছায় কোনও পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন, তখন তিনি এটা জেনেই এগিয়েছেন তার সঙ্গে আইনত বন্ধনে জড়াতে পারবেন না তিনি। এই ক্ষেত্রে ধর্ষণের অভিযোগ আনা যাবে না।
বিচারপতি কওসর এদাপ্পাগথ বলেন, আবেদনকারীর বিশদ বিবৃতি থেকে বোঝা যাচ্ছে, শারীরিক সম্পর্কে দুই পক্ষেরই সম্মতি ছিল। এরপর তিনি বলতে পারেন না যে তাদের শারীরিক সম্পর্ক ছিল বৈধ বিবাহের আইনি বিশ্বাসের ভিত্তিতে। অভিযুক্তকে প্রতারণার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করার মতো কোনও তথ্য নেই। এর পরেই মামলাটি খারিজ করে অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করে দেয় কেরল হাইকোর্ট।
আদালত তার রায়ে জানায়, কোনও অহেতুক কারণ দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতারণা বা ধর্ষণ কোনও অভিযোগই এই ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।