পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ দিল্লির হাড়হিম করা শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের পর এবার রাজস্থানের আজমীরে পণের কারণে স্ত্রীয়ের গলার নলি কেটে খুন। খুনের পর দেহে এলোপাথাড়ি কোপ। মৃতার নাম জেনিফার। ৩৪ বছরের স্বামী মুকেশকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দিল্লিতে শ্রদ্ধা-আফতাব কাণ্ড এখন মূল চর্চিত বিষয়। তার মধ্যে রাজস্থানের ঘটনা ফের নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়াল। বুধবারেই গ্রেফতার করা হয় মুকেশকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, পণের দাবিতে স্ত্রী জেনিফারের সঙ্গে প্রায়ই অশান্তি করত মুকেশ। গত ২৯ অক্টোবর জেনিফারকে বিয়ে করে মুকেশ।
পুলিশ আধিকারিক রূপিন্দর সিং (আজমীর রেঞ্জ) জানান, বুধবার সকাল ১১টা থেকে জেনিফার ও মুকেশের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। সেই সময় জেনিফার মুকেশকে হুমকি দেয়, বাড়িতে সব ঘটনা জানিয়ে দেবে। এর পরেই ক্ষিপ্ত হয়ে জেনিফারের ওপরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে মুকেশ। হত্যাকাণ্ড এতটাই নৃশংস ছিল যে নিহতের শরীর থেকে প্রায় এক ডজন গভীর ক্ষত উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দেহ বিকৃত করার জন্য একাধিকবার ধারালো অস্ত্রের কোপ দেয় অভিযুক্ত মুকেশ। প্রতিবেশীরা জানিয়েছে, তারা চিৎকার শুনেছিলেন। রাতের দিকে মুকেশকে বস্তা করে কিছু নিয়ে যেতে দেখে তারা। ঘটনার পর পরই পালাতে যায় মুকেশ, পরে তাকে ৪ দাওয়ার নগর লেন থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ৩৬ বছর বয়সী কাপড় ব্যবসায়ী মুকেশ বিয়ের জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন। তার বাবা-মা মুকেশের জন্য পাত্রী খুঁজছিলেন। গত বছর আগস্টে তাদের দুই পরিবারের পরিচিত রমেশ, জেনিফারের সঙ্গে মুকেশের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পরিচয়ের মধ্য দিয়ে জেনিফার আর মুকেশের পরিচয় গভীর হয়। দুজনেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে মুকেশের পরিবার ভিন ধর্মী মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিতে চাননি। তখনই বেঁকে বসেন মুকেশ, পরিবারের অমতে গিয়ে জেনিফারকে বিয়ে করেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, বিয়ের পরেই জেনিফারকে পণের জন্য চাপ দিতে থাকে মুকেশ। এর পর বুধবার দুজনের মধ্যে অশান্তি চরমে ওঠে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে গলার নলি কেটে দেয় মুকেশ। এর পরেই সে জেনিফারের দেহে এলোপাথাড়ি ছুরি দিয়ে একের পর আঘাত করে। রাতেই দেহ একটি বস্তায় ভরে রাস্তায় ফেলে দিয়ে আসে।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ছবি শর্মা (আজমীর উত্তর) জানিয়েছেন, ছোটবেলাতেই বাবাকে হারায় জেনিফার। তার মা বিদ্যুৎ দফতরে কাজ করে জেনিফারকে মানুষ করেন। জেনিফারের ভাই দাবি করেন, মুকেশ তাদের কাছে সব সময় পণের জন্য চাপ দিত। প্রায় মারধর করত জেনিফারকে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরীক্ষা করছে এবং মুকেশকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পরে আরও তথ্য জানা যাবে।