পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : দিল্লির জামা মসজিদে পুরুষ অভিভাবক ছাড়া মহিলাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই মর্মে বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক এই মসজিদের তিনটি গেটে বড় বড় করে নোটিশ ঝোলানো হয়েছে। যেখানে লেখা রয়েছে, কোনও একা মহিলা এই মসজিদে প্রবেশ করতে পারবেন না। তবে শাহী ইমাম বুখারি জানিয়েছেন দিল্লির উপরাজ্যপাল ভি কে সাক্সেনার অনুরোধের পরেই এই নোটিশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জামা মসজিদের জনসংযোগ আধিকারিক সাবিউল্লাহ খান সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, ‘মসজিদে মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়নি। মহিলারা একা এসে টিকটক ভিডিয়ো শুট করে এবং নাচ করে। মসজিদ চত্বরে এসব বন্ধ করার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি হল। পরিবার/বিবাহিত দম্পতিদের উপর কোনও বিধিনিষেধ নেই। এই মসজিদটিকে ছেলে এবং মেয়েদের জন্য একটি মিটিং পয়েন্ট করতে দেওয়া যায় না।’
নোটিশের নির্দেশ অনুযায়ী, একদল মহিলা এলেও একসঙ্গে প্রবেশ করতে পারবেন না মসজিদের ভিতরে। কোনও আত্মীয় পুরুষ ছাড়া মহিলাদের আর জামা মসজিদের ভিতর প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। জানানো হয়েছে, মসজিদের ভেতরে মহিলাদের সঙ্গে অশোভনীয় কাজ রুখতেই কর্তৃপক্ষের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেছে দিল্লির মহিলা কমিশন। জানা গিয়েছে, মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল জামা মসজিদের ইমাম মাওলানা সৈয়দ আহমদ বুখারিকে ইতিমধ্যেই একটি নোটিশ ধরিয়েছেন। একটি ট্যুইট করে তিনি লিখেছেন, ‘দিল্লির জামা মসজিদে মহিলাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা সংবিধান বিরুদ্ধ কাজ। যেমন একজন পুরুষের আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার অধিকার রয়েছে, ততটাই উপাসনার অধিকার রয়েছে মহিলাদেরও। মহিলাদের এভাবে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করার থেকে কেউ বঞ্চিত করতে পারে না।’ হিন্দিতে লেখা জামা মসজিদের গেটের নোটিশগুলির অর্থ বাবা-ভাই, স্বামী, পুত্র কিংবা কোনও পুরুষ অভিভাবক থাকলে তবেই ভিতরে প্রবেশে অনুমতি মিলবে মহিলাদের। মহিলা কমিশন নোটিশ দিয়ে বলেছে, আগামী ২৮ নভেম্বরের মধ্যে জবাব দিতে হবে এই ধরনের সিদ্ধান্ত কোন মিটিংয়ে হয়েছে এবং সেখানে কতজন উপস্থিত ছিলেন। এত বছর ধরে মহিলারা একাকী এখানে ইবাদত করছেন কোনও সমস্যা হয়নি। এখন এই নতুন নিয়ম চালু করা হবে কেন? মহিলা কমিশনের চিঠির প্রতিক্রিয়ায় ইমাম বুখারি জানান, মসজিদে ইবাদতের জন্য মহিলাদের কোনও বাধা নেই। এটা ইবাদতের জায়গা, পুরুষ বন্ধুকে নিয়ে আড্ডা মারার জায়গা নয় এটা। সেজন্যই এই নির্দেশ। শাহী ইমাম আরও বলেন, মসজিদ, মন্দির , গুরুদ্বার প্রার্থনার জায়গা। প্রার্থনার জন্য কাউকে বাধা দেওয়া হয় না। কিন্তু এখানে বেশকিছু ঘটনা ঘটেছে, সেজন্য কড়াকড়ি করতে হচ্ছে এই ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থানটির সুনাম অক্ষুন্ন রাখার জন্য।