পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক : পদত্যাগের জন্য প্রস্তুত বলে জানালেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মুহাম্মদ খান। কেরলের রাজ্যপাল বলেন, তার বিরুদ্ধে আরএসএস এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার অভিযোগ প্রমাণিত হলে রাজ্যপালের পদ থেকে ইস্তফা দেবেন তিনি। প্রধানত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যে তাঁর এবং ক্ষমতাসীন এলডিএফ-এর মধ্যে তিক্ত যুদ্ধ অব্যাহত।
এই পরিস্থিতিতে খান আরও জোর দিয়ে বলেন, তার কাজ হল সরকারের ব্যবসা আইন অনুসারে লেনদেন করা হয় তা দেখা। কেরল সরকার দ্বারা আরিফ মুহাম্মদ খান রাজ্যপাল পদে বসেন তিন বছর আগে। এক সাক্ষাৎকারে তার বিরুদ্ধে সমালোচনার বিরুদ্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করে আফিফ মুহাম্মদ বলেন, ‘কোথায় রাজনীতিকরণ? আমি বললাম, গত তিন বছর ধরে আপনারা বলছেন যে আমি আরএসএসের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছি। উদাহরণ হিসেবে আমাকে একটি নাম দিন যেখানে আমি এমন কাউকে নিয়োগ করেছি যাকে আপনি রাজনৈতিকভাবে অসুবিধাজনক বলে মনে করেন। এমন একটি নাম দিন যেখানে আরএসএস, বিজেপি, আমার কর্তৃত্ব ব্যবহার করছে বা আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে কারও নাম প্রস্তাব করেছি। তাহলেই আমি পদত্যাগ করব।’ তিনি বলেন, ‘এটা রাজনীতিকরণ হতে পারে, যদি কেউ এই ধরনের কাজ করে। আমি করিনি বা এটা করার জন্য আমার ওপর কোনও চাপও নেই।”
উল্লেখ্য, আরিফ মুহাম্মদ খান এবং মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের নেতৃত্বাধীন সরকারের মধ্যে চলা দ্বন্দ্বের মধ্যেই মঙ্গলবার বাম দলগুলি রাজ্যের রাজধানী তিরুবনন্তপুরমের রাজভবনে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে।সিপিআই(এম) এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছিলেন, যে এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যেখানে রাজ্যপালের কার্যালয় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান করছে। এই ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক ভারতকে তাদের পছন্দের ফ্যাসিবাদী হিন্দুত্ব রাষ্ট্রে রূপান্তর করার জন্য শিক্ষাকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এই বিষয়টি বিজেপি-আরএসএসের রাজনৈতিক নকশার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এর জন্য আমাদের তরুণ সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, কেরলে সিপিএম পরিচালিত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন রাজ্যপাল আরিফ মুহাম্মদ খান। অভিযোগ তোলেন, কেরলে মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকেই চোরাচালানে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়।
আরিফ মুহাম্মদের এই ভাবে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করাকে অনেকেই মনে করেছেন, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন রাজ্যপাল।
কেরলে সোনা চোরাচালানের একটি ঘটনায় গত বছর নাম জড়ায় মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের অফিসের কয়েকজন আধিকারিকের। সেই নিয়ে তদন্ত চলছে। সেই ঘটনাকে রাজ্যপাল কেন এখন টেনে আনলেন তা নিয়ে তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে।
কেরলের উপাচার্য নিয়োগের ক্ষমতা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিরোধ বেঁধেছে রাজ্যপালের। সেই বিরোধে জড়িয়েছেন উপাচার্যরাও। নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য আরিফ। সেই নির্দেশ অগ্রাহ্য করে উপাচার্যরা আদালতে যান। রাজ্যপাল আরিফ হুঁশিয়ারি দেন, তাঁকে অবমাননা করলে মন্ত্রীদের সরিয়ে দিতে হবে। তাঁর সমালোচনা করায় কেরলের অর্থমন্ত্রীকে সরিয়ে দিতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছিলেন তিনি।