নিজস্ব প্রতিনিধি: সর্বগ্রাসী গঙ্গার সর্বনাশা ভাঙনের হাত থেকে মালদা, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ার মানুষকে রক্ষা করার আর্জি জানিয়ে বৃহস্পতিবার ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ফরাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষ যাতে ভাঙন রোধে আরও সক্রিয় ভূমিকা নেয় চিঠিতে সেই অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি।
গত কয়েক বছর ধরে গঙ্গা, পদ্মা আর ফুলহার নদীর ভাঙনে মালদা, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া জেলার বিস্তীর্ণ গ্রাম, চাষের জমি, বসত ভিটে জলের তলায় তলিয়ে যাচ্ছে।
প্রতি মুহূর্তে এক অজানা আশঙ্কাকে সঙ্গী করে বেঁচে থাকছেন তিন জেলার কয়েক লক্ষ মানুষ। গত ২১ ফেব্রুয়ারি তিন নদীর ভাঙন সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিন্তু তাতেও কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের হুঁশ না ফেরায় এদিন ফের চিঠি লিখেছেন তিনি। ওই চিঠিতে মমতা লিখেছেন, ‘গত ২১ ফেব্রুয়ারি গঙ্গা নদীর ভাঙন সমস্যাটি আপনার গোচরে এনেছিলাম। সেই চিঠির জবাবে গত ২৮ জুলাই কেন্দ্রের জলশক্তি মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, নদী ভাঙন রোধে ফরাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষ ২০০৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৩৪২ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট এলাকায় এখনও ভাঙন রয়ে গিয়েছে। হাজার-হাজার মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে চলেছেন।’
কীভাবে গঙ্গা সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে তা উল্লেখ করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘গঙ্গার ভাঙন সুধু বাংলারই সমস্যা নয়। বিহারেরও বড় সমস্যা। জাতীয় পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়টি উত্থাপিত করা হয়েছিল। ভাঙনের ফলে মালদহের মানিকচকে বিল্লামারি গ্রামে ফুলহার নদী ও গঙ্গার মধ্যে দূরত্ব কমে দেড় কিলোমিটারে নেমে এসেছে।
২০০৪ সাল নাগাদ যা চার কিলোমিটারে বেশি ছিল। গঙ্গার ভাঙনের ফলে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ ১৩১-এ জাতীয় সড়কের ভবিষ্যতও বিপদের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।’
বাংলাদেশ সরকার সেদেশের ভূখণ্ডের মধ্যে একটি বাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে ফরাক্কা এবং প্রস্তাবিত বাঁধের মধ্যবর্তী অংশ ভাঙনের জন্য বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ফরাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষ যাতে ভাঙন রোধে নিজের পরিধি আরও বাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেই অনুরোধও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।