পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: জবরদস্তি ধর্মান্তরণকে অত্যন্ত গুরুতর বিষয় আখ্যা দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট সোমবার কেন্দ্রকে নির্দেশ দিল এসব বন্ধ করতে উপযুক্ত ব্যবস্থা করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা নিয়ে আসে বিজেপি সমর্থক আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়। তাঁর আবেদনে উপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্টকে জানান, কেন্দ্র সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হোক জবরদস্তি ধর্মান্তরণ বন্ধ করতে।
আবেদনে তিনি জানান, ভয় দেখিয়ে, প্রলোভন দেখিয়ে এবং আর্থিক সুবিধা বা উপঢৌকন দিয়ে ধর্ম পরিবর্তন করানো হচ্ছে। বিচারপতি এমআর শাহ এবং বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চে এই মামলা চলার সময় বিচারপতি সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতাকে বলেন, প্রলোভিত করে ধর্মান্তরণ বন্ধ করতে হবে। এটা বন্ধ না করলে ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
বিচারপতিগণ তুষার মেহতাকে বলেন, কেন্দ্র সরকার আদালতকে জানাক কী কী পদক্ষেপ নিতে চাইছে এ ব্যাপারে। বিচারপতিদের মতে জবরদস্তি ধর্ম পরিবর্তন করা হলে দেশের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। দেশে ধর্মপালনের স্বাধীনতায় বিঘ্ন ঘটবে। ২২ নভেম্বর সরকারকে জবাব দাখিল করতে হবে এ বিষয়ে। পরবর্তী শুনানির দিন ২৮ নভেম্বর। কেন্দ্র সরকারের ভূমিকা জানাতে চায় আদালত।
উল্লেখ্য, হিন্দুরা দলে দলে ধর্ম পরিবর্তন করে বৌদ্ধ হয়ে যাচ্ছেন, কোথাও খ্রিস্ট বা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। আর এটা বন্ধে বহুদিন থেকে মাঠে নেমে প্রচার চালাচ্ছে সংঘ পরিবার। চার্চের অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়া হয়েছে, এমনকী লিফলেট বিলিয়ে ধর্ম পরিবর্তনে প্রলোভন দেওয়ার অভিযোগ এনে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধর্ম পরিবর্তন নিয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি ইতিমধ্যে অনেক কড়াকড়ি করেছে।
আর এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের হাত আরও একটি মারাত্মক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। জনস্বার্থ মামলায় চ্যাম্পিয়ন হিসেবে খ্যাত বিজেপির আইনজীবী অশ্বিনী উপাধায় বহু ইস্যুতে বহুবার আদালতে বিফল হলেও কিন্তু ধর্মান্তরণ ইস্যুকে সক্রিয় করে তুলতে সফল হলেন।
তামিলনাড়ুর এক ১৭ বছরের ছাত্রী ধর্ম পরিবর্তনের চাপ থাকায় আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ ওঠে স্কুলের বিরুদ্ধে, সেই ঘটনা এই আবেদনে উল্লেখ করা হয়। স্বেচ্ছায় ধর্ম পরিবর্তন, নাকি প্রলোভনের মাধ্যমে, তাঁর বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সক্রিয়তা ও আইনি লড়াইয়ের পথ প্রশস্ত হয়ে যেতে পারে এরপর থেকে।