নসিবুদ্দিন সরকার, হুগলি: বুধবার সকাল থেকে অবিরাম বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। খানাকূলের অবস্থা কিছুটা হলেও স্থিতিশীল বন্যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলতে পারে এই বৃষ্টিপাত। এমনই আশঙ্কায় প্রহর গুনছে খানাকূলবাসী। বুধবার খানাকূলের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করতে আসার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু এদিন সকাল থেকে অবিরাম বৃষ্টিপাত মুখ্যমন্ত্রীর সেই পরিকল্পনাকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর খানাকূলের আসার জন্য ঘোষপুর মান্নাডাঙ্গায় প্রশাসন যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে অস্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরি করেছিল।
এদিন সকাল থেকে একনাগাড়ে বৃষ্টিপাতের ফলে ওই হেলিপ্যাড জলমগ্ন হয়ে পড়ে। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে মুখ্যমন্ত্রীর খানাকুলের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন বাতিল করা হয়। প্রশাসনিক ও তৃণমূলের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আবহাওয়ার উন্নতি হলে আগামী শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী খানাকূলের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে আসতে পারেন। তিনি দুর্গত এলাকা ঘুরে দেখবেন।দুর্গত মানুষদের সঙ্গে কথা বলবেন। তবে দুর্গত মানুষদের সাহায্যার্থে প্রশাসনিক স্তরে কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না। পাশাপাশি তৃণমূলের দলীয় স্তরেও বন্যা দুর্গত মানুষদের সাহায্য করা হচ্ছে বিভিন্ন ভাবে।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খানাকূলের পরিদর্শনে আসার বিষয়ে জেলা ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তৎপরতা ছিল তুঙ্গে। নির্ধারিত দুপুর ১ টা নাগাদ খানাকুলের মান্নাডাঙার হেলিপ্যাডে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামার কথা ছিল। তারপর তিনি দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের স্পিড বোর্ডে করে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করতেন। কিন্তু নিম্নচাপের ভ্রুকুটির কারণে এদিন সকাল থেকে অবিরাম বৃষ্টিপাতের কারণে মুখ্যমন্ত্রীর সফরসূচি বাতিল করতে হয়।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিপাত ও জলাধারগুলি থেকে ডিভিসির লাগাতার জল ছাড়ার ফলে খানাকূলসহ আরামবাগ মহাকুমার সবকটা নদীতে ব্যাপক জলস্ফীতি ঘটে। ফলে এলাকায় রূপনারায়ণ ও দ্বারকেশ্বর নদীর একাধিক জায়গায় বাঁধ ভেঙে যায়। ফলে খানাকূলের দুটি ব্লকেই একপ্রকার জলের তলায় চলে যায়। মঙ্গলবার কিছুটা হলেও বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল ছিল।
বুধবার সকাল থেকে একনাগাড়ে বৃষ্টি বন্যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়ঙ্কর করে তুলতে পারে বলে এলাকাবাসী ও প্রশাসনের আশঙ্কা। এমন সংকটজনক পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে জলবন্দি মানুষদের উদ্ধারকাজে ও ত্রাণ বন্টনে শেষ পর্যন্ত বায়ুসেনার হেলিকপ্টারকে নামাতে হয়। এখনও জলবন্দি হয়ে থাকা দুর্গত মানুষদের উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে পাঠানোর কাজ জারি রয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। এদিন ওইসব ত্রাণশিবির ঘুরে দেখার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।