পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসে সাধারণের সুবিধার জন্য কেন্দ্র সরকার ‘টেলি মানস’ পরিষেবা চালু করল। এটি একটি অন-কল মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা সুবিধা। সরকারের লক্ষ্য সাশ্রয়ী মূল্যে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সহায়তার সুবিধা প্রদান করা। সরকার জানিয়েছে, ‘টেলি মানস’ জেলা মানসিক স্বাস্থ্য প্রোগ্রাম’-এর ডিজিটাল হাত হিসাবে কাজ করবে।
সাধারণ মানুষকে এই সুবিধা নিতে হলে, ১-৮০০-৮৯১-৪৪১৬ এই নাম্বারে ডায়াল করতে হবে।
নিজস্ব ট্যুইটার হ্যান্ডেলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য জানিয়েছেন, ‘সরকারের প্রচেষ্টার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে এই পরিষেবা একটি ‘সমন্বিত চিকিৎসা এবং মনস্তাত্ত্বিক হস্তক্ষেপ’ হিসেবে কাজ করবে। সুস্থ মানসিক বিকাশের জন্যই এই ‘টেলি মানস’, পরিষেবা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজির সরকার প্রতিটি রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সাশ্রয়ী মূল্যের মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবার সমস্ত সুবিধা প্রদানের জন্য ‘টেলি মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা সহ রাজ্য জুড়ে নেটওয়ার্কিং কর্মসূচি চালু করেছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য আরও জানিয়েছেন, এই উদ্যোগটি এর আগে ইউনিয়ন বাজেটে ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল সহ পিছিয়ে পড়া জনজাতির মধ্যে এই পরিষেবা সুদূর প্রসারিত হবে। সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের জন্য এই প্রোগ্রামটিকে সেইভাবেই রূপায়ণ করা হয়েছে।
এই প্রোগ্রামটি মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, সরকারের বিনামূল্যে টেলিমেডিসিন পরিষেবা ই-সঞ্জীবনী, আয়ুষ্মান ভারতের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্র, জরুরি মানসিক চিকিৎসা সুবিধাগুলির সঙ্গে নিমহান্স নোডাল সেন্টার হিসেবে কাজ করবে। আইআইটি বম্বেকে এই প্রোগ্রামে কারিগরি সহায়তা প্রদানের জন্য একটি অংশীদার করা হয়েছে। একটি ব্যাপক নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য পাঁচটি আঞ্চলিক সমন্বয় কেন্দ্র, ২৩টি পরামর্শদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং ৫১টি রাজ্য সহ কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে টেলি মানস সেল থাকবে।
টোল-ফ্রি হেল্পলাইন নম্বর- ১৪৪১৬ সহ মানসিক স্বাস্থ্য প্রোগ্রামটি কর্ণাটকের গভর্নর থাওয়ার চাঁদ গেহলট বেঙ্গালুরুর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরোসায়েন্সেস নিমহান্স এ চালু করেন।
উল্লেখ্য, বর্তমান সময় মানসিক চাপ, হতাশা, অবসাদের মতো সমস্যায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে গোটা সমাজ। এই সমস্যা সঠিক সময় নিয়ন্ত্রণ না করলে তা কঠিন আকার নিতে পারে। এমনকী মানসিক জটিলতা মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে। সেই কারণে সময় থাকতে প্রয়োজন সতর্ক হওয়া। এই সতর্কতার বার্তা প্রকাশে প্রতি বছর পালিত হয় মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। কিন্তু এখনও মানসিক স্বাস্থ্যে চিকিৎসা নিয়ে সাধারণ মানুষ লোকলজ্জায় ভুগে থাকেন। সঠিক চিকিৎসা না হওয়ার ফলে অনেক সময় জটিল সমস্যায় পরিণত হয় এই রোগ।
হু-এর প্রকাশিত এক তথ্য অনুসারে, ২০১৯ সালে মহামারি হওয়ার আগে, সারা বিশ্বের প্রায় আটজনের মধ্যে অন্তত একজন মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিল।
হু-এর তথ্য অনুযায়ী, কোভিড-১৯ মহামারি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য একটি বিশ্বব্যাপী সংকট তৈরি করেছে। করোনা মহামারির কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অনুমান করা হয় মহামারির প্রথম বছরে উদ্বেগ ও হতাশা এই রোগের বৃদ্ধি ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে তুলেছে।
বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ২০২২-এর থিম হল সকলের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতাকে একটি বিশ্বব্যাপী অগ্রাধিকার দিন। যারা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন সকলকে সতর্ক করার জন্য পালিত হয় এই দিনটি। এক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকারের এই ‘টেলি মানস’ পরিষেবা একটি বড়সড় উদ্যোগ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।