পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: বর্ণ এবং জাতপাতের ধারণা সম্পূর্ণভাবে অবলুপ্ত হওয়া উচিত। নাগপুরে একটি বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এসে শুক্রবার এই মন্তব্য করেছিলেন সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত। তিনি বলেন, ‘বর্ণব্যবস্থার কোনও প্রাসঙ্গিকতাই এখন আর নেই।’ ভাগবতের প্রশংসা করে, এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার বলেন, ‘এমন একটি ইস্যুতে শুধু উদ্বেগ প্রকাশ করাই সমাধান নয়। এটি বাস্তবায়ন হওয়া উচিত। তা নাহলে, এটা স্রেফ কথার কথা থেকে যাবে।’
ভাগবত বলেন, বর্ণপ্রথা দেশে বৈষম্যের সৃষ্টি করছে। তাই নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, যা কিছু বৈষম্য সৃষ্টি করে, সে সব কিছুকেই বাতিল ঘোষণা করা উচিত। কেউ যদি বর্ণ এবং জাতির মতো প্রাচীন প্রতিষ্ঠানগুলির প্রসঙ্গ তোলেন, তবে উত্তর দিতে হবে যে, এগুলি এখন অতীত হয়ে গিয়েছে। তাই এগুলি ভুলে যান। তিনি আরও বলেন, সব দেশেই পূর্বপুরুষরা কিছু ভুল করে যান। তেমনই ভারতের বর্তমান প্রজন্মও পূর্বপুরুষদের ভুলগুলি বুঝতে পেরে সেগুলি সংশোধন করে নেবেন।
মনুবাদী আরএসএস কি জাত পাত রুখতে বাস্তবিকই কোনও পদক্ষেপ নিতে পারবে ? কেবল শরদ পাওয়ার নয়, এই জিজ্ঞাসা বহু মনে? অনেক মনে করছেন, ২০২৪ এর লোকসভা ভোটে বিজেপির পথ মসৃণ করতেই এমন পন্থা নিয়েছেন ভাগবত। মোদি জমানার শুরু থেকে বিজেপি নেতারা যে রাজনৈতিক স্লোগান দিয়ে আসছেন তা ছিল বিদ্বেষে ভরা। এই বিদ্বেষের কারণে বিদেশের মাটিতেও ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। বাণিজ্য ধাক্কা খেয়েছে। তাই এবার সংঘ প্রধান আগেভাগেই বিজেপির রাজনৈতিক লাইন বানিয়ে দিয়েছেন। হিন্দু রাষ্ট্রের বার্তা দিয়ে তিনি বিজেপির কর্মী সমর্থকদের খানিকটা রাজনৈতিক সহিষ্ণুতার পাঠ দিয়েছে। পিএফআইকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর থেকে অনেকেই আরএসএসকেও নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছে।
ফলে গান্ধিগিরি করতে নেমেছেন ভাগবত। এমনটা মনে করছেন অনেকে। অন্যদিকে তিনি জাত-পাত মুক্ত রাজনীতির বার্তা দিয়ে তিনি আসলে হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক বিভাজন রুখতে চাইছেন। দলিত ও নিম্নবর্ণের ভোট যাতে অন্যের ঝুলিতে না যায় সে চেষ্টা আগাম শুরু করছেন সঙ্ঘপ্রধান। যার অর্থ মুখে জয়শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে যে সামগ্রিক ভাবে হিন্দদের ভোট দখল করা যাবে না তা আরএসএস বুঝেছে। তাই তারা এবার অন্তত মুখে জাত পাতের বেড়া ভেঙে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট পেতে মরিয়া।