পুবের কলম প্রতিবেদক: রাজনৈতিক, বুদ্ধিজীবী মহল থেকে এক শ্রেণির আমজনতা সকলের কাছেই বাণিজ্য, বিনিয়োগ নিয়ে বহুবার কটাক্ষের মুখে পড়েছে রাজ্যের শাসকদল। বিরোধীরাও এই ইস্যুটিকে সামনে রেখে রাজ্যে নেতৃত্বের বদনাম করতে ছাড়েননি। এবার সেই সমস্ত মন্তব্যকে নস্যাৎ করে রাজ্যের মুকুটে জুড়ল আবারও অনন্য স্বীকৃতির পালক। আর এই স্বীকৃতি এল জাতীয় ক্ষেত্র থেকেই। অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে তুলনামূলক প্রতিদ্বন্দ্বীতার পরেই। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আবারও দেখিয়ে দিলেন তিনি শুধু মুখেই বলেন না, কাজ করে দেখাতে জানেন।
রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই বিজেপি তথা অন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি রাজ্যকে শিল্প নিয়ে কম শুনিয়ে আসেননি। একাধিকবার নানাভাবে রাজ্য নেতৃত্বকে আক্রমণ করে কোণঠাসা করার কাজ চালিয়ে গেছে বিরোধী পক্ষ। তাদের সেই মন্তব্য যে ধোপে টেকেনি তা আরও প্রমাণ হল রাজ্যের ঝুলিতে আসা চারটি স্কচ অ্যাওয়ার্ড-এর মাধ্যমে।
যে রাজ্যকে নিয়ে এত কটাক্ষ, এবার সেই রাজ্যেই যে ব্যবসার জন্য আদর্শ পরিবেশ রয়েছে তা প্রমাণিত হয়ে গেল জাতীয় ক্ষেত্রে রাজ্যকে স্বীকৃতির মাধ্যমে। বিভাগ ‘ইজ অফ ডুইং বিজনেস’ বা ‘শিল্প সাথী’ প্রকল্পের জন্য স্কচ প্ল্যাটিনাম পুরস্কার জিতে নিয়েছে রাজ্য সরকার।
এদিন মোট চারটি বিষয় স্কচ অ্যাওয়ার্ড এসেছে রাজ্যের ঝুলিতে। তার মধ্যে রয়েছে অবশ্যই এই ব্যবসার উত্তম পরিবেশের বিষয়টিও। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন তাঁর ফেসবুকে বাংলার সাধারণ মানুষের সঙ্গে এই সুখবর ভাগ করে নিয়েছেন। একইভাবে এসেছে ‘স্কচ সিলভার অ্যাওয়ার্ড’। গ্রামাঞ্চলে অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু প্রক্রিয়া সরলীকরণ করার জন্য রাজ্য পেল ‘স্কচ সিলভার অ্যাওয়ার্ড’। অনলাইনে ডিড তৈরি, অনলাইনেই তা সাবমিট করার প্রক্রিয়া চালু করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এবার তাদের সেই প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানাল গোটা দেশ। মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রকল্প এবার জিতে নিয়েছে স্কচ গোল্ড অ্যাওয়ার্ড। এদিন এই স্কচ অ্যাওয়ার্ডের খবর সোশ্যাল সাইটে জানাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’ বা ব্যবসা শুরুর প্রক্রিয়াকে আরও সরলীকরণ করার কাজ চালিয়ে যাবে বাংলা। গোটা দেশের মধ্যে এ রাজ্যেই সবচেয়ে সহজে ব্যবসা করা যায়। যাঁদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এই সম্মান এল, তাঁদের সকলকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি’।
এমনিতেই অলিম্পিকের মরশুম চলছে, সেখানে বাংলার জন্য এই স্বীকৃতি কোনও অংশেই কম নয়। সরকারি ক্ষেত্রে জাতীয় সফলতা আরও একবার গোটা দেশের মানুষের কাছে দেখিয়ে দিল বাংলা কাজে অন্যদের থেকে এগিয়ে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যে শিল্পের অনুকূল পরিবেশ গড়ার জন্য তৈরি প্রকল্প মানুষের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। এই উদ্যোগ শিল্পপতিদের আরও উৎসাহ যোগাচ্ছে এই রাজ্যে বিনিয়োগে।
এখন আর রাজ্যে কারখানা তৈরির ক্ষেত্রে আর হচ্ছে না ৩০-৪০ রকমের ফর্ম ফিলাপের, দৌড়াতে হয় না এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে। এক্ষেত্রে অনলাইনের মাধ্যমে মিলেছে, মিলছে সমস্ত সমস্যার সমাধান। আবার গ্রামীণ এলাকায় শিল্পের প্রসারের জন্য সরকারি উদ্যোগও স্বীকৃতি পেল। গ্রামীণ শিল্পের ক্ষেত্রেও এখন আর ছুটতে হচ্ছে না জেলা পরিষদ বা পঞ্চায়েত সমিতির দরজায়। এক্ষেত্রে অনলাইনে তাদের সব রকম সাহায্য করা হচ্ছে। এতদিন একটা সার্টিফিকেট পেতে কালঘাম ছুটত সাধারণ মানুষের।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের সেই লাল সুতোর পাশ থেকে বের করে এনেছেন। অনলাইনের মাধ্যমে সহজেই এখন বাড়িতে চলে আসছে সার্টিফিকেট। এই সমস্ত কিছুরই স্বীকৃতি মিলল জাতীয় ক্ষেত্র থেকে।