পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ইলাহাবাদ হাইকোর্ট বলেছে, জ্ঞানবাপী মসজিদ সংক্রান্ত বিষয়টি জাতীয় ইস্যু। এক্ষেত্রে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া বা এএসআইয়ের ডিজির মতামত অবশ্যই প্রয়োজন। আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটির এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট এ কথা জানায়। এ সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী শুনানি ১৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। ইলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি প্রকাশ পাড়িয়া এক পর্যবেক্ষণে এ কথা বলেছেন।এএসআইয়ের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান।
অনেকেই মনে করছেন, বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে আবার দেশে অভিনীত হতে চলেছে সেই পুরনো নাটক, যাকে আমরা বাবরি মসজিদ রামজন্মভূমি বিতর্ক বলে জানি। ইতিমধ্যে উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে বারাণসী জেলা আদালতের সাম্প্রতিক রায়ের পরে, হিন্দুত্ববাদীরা প্রকাশ্যেই স্লোগান তুলছেন, অযোধ্যা তো ব্যস ঝাঁকি হ্যায়, কাশী মথুরা বাকি হ্যায়…।
বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ একটি কয়েক শতাব্দী প্রাচীন মুসলিম উপাসনাস্থল। এ পর্যন্ত জানা তথ্য অনুযায়ী ১৬৬৯ সালে মুঘল বাদশা আওরঙজেব-এর নির্দেশে মুসলিমদের এই উপাসনাস্থল নির্মিত হয়। মসজিদটি কাশীর বিখ্যাত বিশ্বনাথ মন্দিরের ঠিক পাশেই, বাম দিকে অবস্থিত।
২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর বাবরি মসজিদের বিতর্কিত জমি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ঠিক পরে বারাণসী জেলা আদালতে কয়েকজন হিন্দু ব্যক্তি মামলা রুজু করেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, জ্ঞানবাপী মসজিদে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে-কে দিয়ে ক্ষেত্র সমীক্ষা করানো হোক।
২০২০ সালে জ্ঞানবাপী মসজিদ পরিচালন সংস্থা অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া ২০১৯ সালের হিন্দুদের আবেদনের বিরোধিতা করে। অন্যান্য মুসলিম ধর্মীয় সংগঠনও মামলায় যুক্ত হয়। ২০২১ সালে বারাণসীর আদালত আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে-কে দিয়ে ক্ষেত্র সমীক্ষা করানোর পক্ষে রায় দেয়। মামলাটি ইলাহাবাদ হাইকোর্টে এলে উচ্চ আদালত নিম্ন আদালতের ওই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেয়।
উল্লেখ্য ১২ সেপ্টেম্বর উত্তর প্রদেশের বারাণসী জেলা বিচারক মুসলিম পক্ষের আপত্তি খারিজ করে জ্ঞানভাপি মসজিদ-শ্রিংগার গৌরী মামলা গ্রহণযোগ্য বলে রায় দিয়েছে। জ্ঞানবাপি মসজিদ প্রাঙ্গণে হিন্দু উপাসকদের বছরব্যাপী প্রবেশাধিকার চাওয়ার আবেদনে আপত্তি জানিয়ে আসছে মসজিদ কমিটি। কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের পাশে অবস্থিত মসজিদ কমপ্লেক্সের বাইরের দেয়ালে শ্রিংগার গৌরীর উপাসনার অধিকার এবং বছরব্যাপী প্রবেশাধিকার চেয়ে ৫ হিন্দু মহিলার দায়ের করা মামলায় আপত্তি জানিয়ে আবেদন করেছে জ্ঞানবাপি মসজিদ পরিচালনাকারী আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া। জেলা আদালতের বিচারক এ কে বিশ্বেশ্ব রায় দিয়েছেন, হিন্দু উপাসকদের মামলাটি পূজার স্থান আইন বা ওয়াকফ আইনে নিষিদ্ধ নয়।
আবেদনকারী সোহান লাল আর্য বলেছেন, ‘মুসলিম আবেদনকারীরা আপিলের জন্য ইলাহাবাদ হাইকোর্টের কাছে গেছে, কিন্তু তারা মামলার প্রতিদ্বন্দ্বিতা চালিয়ে যাবেন।
১৯৯৮ সালে আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি ইলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় যে, মন্দির-মসজিদ জমির বিরোধ সিভিল কোর্টে নিষ্পত্তি করা যায় না কারণ এটি আইনে অনুমোদিত নয়। হাইকোর্ট ২২ বছরের জন্য কার্যক্রম স্থগিত মঞ্জুর করে।