পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: লখনউ হোটেলে বিধবংসী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আগুনে পুড়ে মৃত্যু হল ৬ জনের। অগ্নিদগ্ধ আরও ১০ জন। সোমবার সকালে উত্তরপ্রদেশের লেভানা হোটেলে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। হোটেলের ভিতর আটকে পড়েন কমপক্ষে ৩৫ জন। প্রাথমিকভাবে দমকল ১৫ জনকে উদ্ধার করে।
খবর পাওয়া মাত্রই জোরকদমে উদ্ধার কাজ শুরু করে দমকল বাহিনী। হোটেলের ভিতর থেকে দুজনকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। চারদিকে ধোঁয়ায় ভরে যাওয়ায় অক্সিজেন মাস্ক পরে উদ্ধার কাজ চালান দমকল কর্মীরা। লখনউয়ের হজরতগঞ্জের লেভানা হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির প্রশ্ন উঠেছে।
সূত্রের খবর, ওই হোটেলে কোনও এমার্জেন্সি এক্সিট বা আপৎকালীন দরজা ছিল না। এমনকী রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রগুলিও ছিল সম্পূর্ণ অকেজো। দিন দুই আগে বিভিন্ন কারণে লখনউ ডেভলপমেন্ট অথরিটি নোটিস পাঠিয়েছিল এই হোটেলটিকে।
Uttar Pradesh | Fire breaks out at a hotel in Hazratganj in Lucknow. Efforts underway to evacuate the people in the hotel rooms. Details awaited. pic.twitter.com/qqlIxvRtwZ
— ANI UP/Uttarakhand (@ANINewsUP) September 5, 2022
উত্তরপ্রদেশের অতিরিক্ত স্বাস্থ্য আধিকারিক জিএস বাজপেয়ী বলেন, সোমবার সকালে হজরতগঞ্জের লেভানা হোটলে আগুন লাগে। দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ১০ জনকে সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনায় উত্তরপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান। মুখ্যমন্ত্রী জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের আহতদের দ্রুত চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনাস্থলে যান জেলা শাসক সহ বর্ষীয়ান পুলিশ আধিকারিকেরা।
দমকলের ডিজি জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজ চলাকালীন রুমগুলো ধোঁয়ায় ভরে যায়। ভেতরে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। জানালার প্যান ও গ্রিল ভেঙে দুজনকে উদ্ধার করা হয়’।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ট্যুইটে তিনি লিখেছেন, ‘লখনউয়ের একটি হোটেলে আমি এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের খবর পাই। আমি স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে ঘটনার সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়েছি। উদ্ধার কাজ চলছে। আমার অফিস স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখছে। জখমদের আমি দ্রুত সুস্থতা কামনা করি’।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সূর্যপাল গ্যাংওয়ার জানিয়েছেন, খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে যায় দমকল বাহিনী। জখমদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছনোর কাজ শুরু হয়। হোটেলের মালিকের বয়ান অনুসারে হোটেলের ৩০টি ঘরের মধ্যে ১৮টিতে সেই সময় অতিথিরা ছিলেন। সকালেই ৩৫ থেকে ৪০ জন ঘর ছেড়ে চলে যান। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুন লাগার ঘটনাটি ঘটেছে। হোটেলের মালিকের বক্তব্য অনুসারে নীচে ব্যাঙ্ককোয়েট হল থেকেই কোনও দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। হোটেলের ছাদে একটি বার রয়েছে।
রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছেন দোষ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজ্য সরকারের তরফে জখমদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপ মুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক জানিয়েছেন, যাতে এই ধরনের ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি না হয় তার জন্য আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে।