পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ অবশেষে আশার আলো দেখতে পেয়েছে শ্রীলঙ্কা।অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের অন্ধকার কাটিয়ে আলোয় ফিরতে এই দেশকে ২৯ লক্ষ মার্কিন ডলারের সহায়তা দিতে রাজি হয়েছে আইএমএফ অর্থাৎ আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল। শ্রীলঙ্কা প্রায় ২৯ লক্ষ মার্কিন ডলারের ঋণের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে একটি প্রাথমিক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল জানিয়েছে, দেশটি কয়েক দশকের মধ্যে তার সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক দিক দেখছে।এই চুক্তিটা সম্পন্ন হলে দেশটি অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসার একটি পথ দেখতে পাবে।উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর এ বারই সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। করোনা মহামারি, জাতীয় অর্থনীতি পরিচালনায় সরকারের অদক্ষতা, বিশ্বজুড়ে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ তলানিতে নেমে যাওয়ার কারণে শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তুলতে আগামী ৪৮ মাসে ধাপে ধাপে ২৯ লক্ষ মার্কিন ডলার দেবে আইএমএফ। ‘এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফেসিলিটি’-র অধীনে এই প্যাকেজ দেওয়া হবে বলেই খবর।প্রসঙ্গত,অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত দ্বীপরাষ্ট্র শেষ কয়েক দশকে অর্থনীতির এরকম বড় পতন দেখেনি।একদিকে চিনের কাছ থেকে নেওয়া চড়া সুদের বিপুল ঋণ, অন্যদিকে শিল্পসংকটের মধ্যে পড়ে হাঁসফাঁস অবস্থা দ্বীপরাষ্ট্রের। শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পি নন্দলাল ওয়েরাসিংহে সাংবাদিকদের বলেছেন যে, দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছিয়েছে যে ঋণ পরিশোধ করা চ্যালেঞ্জিং এবং অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে ঋণ পুনর্গঠন করা এবং হার্ড ডিফল্ট এড়ানোর জন্য সব চেয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। শ্রীলঙ্কার রাজাপক্ষে ভাইদের নেতৃত্বাধীন সরকারের অব্যাবস্থাপনা, অযৌক্তিক কর কাটছাঁট, করোনা মহামারির কারণে পর্যটন ব্যবসায় ধস ও ভবিষ্যৎ পরিণতির কথা না ভেবে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় দেশটির দুরবস্থার প্রধান কারণ।
গণবিক্ষোভের মুখে গত জুলাইয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে।বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফুরিয়ে যাওয়ায় দেশের ২ কোটি ২০ লক্ষ মানুষের জন্য খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধের মতো গুরুত্বপূর্ণ আমদানি করতে পারছে না শ্রীলঙ্কা। দেশটিতে মূল্যস্ফীতি প্রায় ৬৫ শতাংশ বেড়েছে। এক বছর আগের তুলনায় খাদ্যের দাম ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছর মার্কিন ডলার এবং অন্যান্য প্রধান বৈশ্বিক মুদ্রার বিপরীতে শ্রীলঙ্কার রুপির মূল্য হ্রাস পেয়েছে।