পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ডি রামানা সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পানের জামিন মামলা শুনতে রাজি হয়েছেন।বুধবার এই মামলার জরুরি-ভিত্তিতে শুনানির জন্য আর্জি জানায় সিদ্দিক কাপ্পানের আইনজীবী হরিশ বিয়ান। শুক্রবার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করে কাপ্পানের আইনজীবী জানান, হাথরসে কাপ্পানের উপস্থিতি ছিল কেবলমাত্র তাঁর সাংবাদিকতা বৃত্তি ও মিডিয়া হাউসের প্রতি তার দায়িত্ব পালনের জন্যই।
হাথরাসে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার রিপোর্ট করতে আসা অন্যান্য সাংবাদিকের মতোই কাপ্পান হাথরসের ঘটনাস্থলে আসতে চাইছিলেন। ইউপি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। কাপ্পান দু’বছর জেলে কাটিয়ে দিয়েছে। কিন্তু হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানালে হাইকোর্ট জানায় কাপ্পানের সেখানে কোনও ডিউটি ছিল না।
কাপ্পানের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে জানান, হাইকোর্ট সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়নি। সংবিধান স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিয়েছে। হাইকোর্ট যান্ত্রিকভাবে এই জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে কোনও যুক্তি না দেখিয়েই।
আবেদনে বলা হয়, কাপ্পানকে প্রথমে শান্তিভঙ্গের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট তাকে জেল হেফাজতে পাঠান।এরপরই কাপ্পানকে ইউএপিএর ধারায় অভিযুক্ত করা হয়। সে নাকি অন্যান্যদের সঙ্গে মিলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় প্ররোচনা দিতে চাইছিল এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইছিল।
কাপ্পানের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ করা হয় তার কাছ থেকে নাকি উত্তেজনা ছড়ানো ও আপত্তিকর কাগজ প্রচারপত্র উদ্ধার করা হয়েছে, যদিও কাপ্পান সেসব অস্বীকার করছে।পুলিশ কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি যে, কোন জঙ্গি সংগঠনের কাছ থেকে কাপ্পান অর্থ নিয়েছে। পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে কাপ্পানের সম্পর্ক রয়েছে এই কথা বলা হচ্ছে কিন্তু পিএফআই ভারতে কোনও নিষিদ্ধ সংগঠন নয়, না এটি কোনও জঙ্গি সংগঠন।
কাপ্পানের আবেদনে বলা হয়েছে, হাইকোর্ট সম্পূর্ণভাবে এই বিষয়টি এড়িয়ে গেছে যে কাপ্পান ১২ বছর ধরে সাংবাদিকতায় নিযুক্ত রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরোপিত অভিযোগগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে দেখা হয়নি। হাথরসে ধর্ষিতা দলিত যুবতীর মৃত্যু হয় দিল্লির এক হাসপাতালে।
১৫ দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেছিল সে। ২০২০ সালে ১৪ সেপ্টেম্বর তাদের গ্রামে অভিযুক্ত চার যুবক তাকে ধর্ষণ করে ও তার উপর বর্বর অত্যাচার চালায়। তার পরিবারের অভিযোগ, মৃত্যুর পর তার দেহ পরিবারের হাতে না দিয়ে তাদের সম্মতি না নিয়েই দাহ করে দেওয়া হয়। সেই ঘটনা শিহরিত করেছিল সারাদেশের মানুষকে।
উল্লেখ্য, কাপ্পানের সঙ্গী ড্রাইভার মুহাম্মদ আলমকে হাইকোর্ট মঙ্গলবার জামিন দিয়েছে। বলা হয়েছে আলমের কাছে কোনও আপত্তিকর কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। তাই শুক্রবার জানা যাবে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করা সিদ্দিক কাপ্পানের আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দেয়! এই রায়ের দিকে অবশ্যই নজর রাখবে দেশ-বিদেশের মিডিয়া ও সাংবাদিক মহল।