পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অভূতপূর্ব নজির স্থাপন করল রাজস্থানের উদয়পুর। মুহাররমের শোকযাত্রা উপলক্ষ্যে স্থানীয় মুসলিমরা তাজিয়া বের করে। সেই তাজিয়া মোছিওয়াড়া স্ট্রিট দিয়ে যাওয়ার সময় তাতে আগুন লেগে যায়। সেই আগুন নেভাতে এগিয়ে আসে এক হিন্দু পরিবার।
তবে ২৫ ফুট উঁচু এই তাজিয়ায় কীভাবে আগুন লাগল তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। যদিও পুলিশের দাবি, শট্ সার্কিট থেকে আগুন লেগে যেতে পারে। উল্লেখ্য, নবী সা. অবমাননাকে কেন্দ্র করে তপ্ত হয়ে উঠেছিল এই উদয়পুর। বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মাকে সমর্থন করে এখানেই খুন হয়েছিলেন দর্জি কানহাইয়া লাল। আর যে রাস্তার উপর কানহাইয়ার দোকান ছিল, সেই রাস্তা দিয়েই যাচ্ছিল তাজিয়াটি।
মুহাররমের তাজিয়ায় অসংখ্য মুসমিল অংশ নিয়েছিলেন। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে যথেষ্ট উৎসাহ নিয়ে দেখছিলেন হিন্দু সহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানু¡রাও। অনেকে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সেই তাজিয়া দেখছিলেন। সেই সময় আচমকা ওই তাজিয়ায় আগুন লেগে যায়। সেটা প্রথমে নজরে আসে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থাকা একটি হিন্দু পরিবারের। তাঁরা সঙ্গেসঙ্গে চিৎকার শুরু করে দেন।
শুধু সতর্ক করেই থেমে থাকেননি তাঁরা। আগুনে তাজিয়ার বড় ক্ষতি হতে পারে আশংকা করে ওই হিন্দু পরিবারের সব সদস্য উপর থেকে জল ঢেলতে শুরু করে তাজিয়ার উপর। তাঁদের এই চেষ্টার কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আশ্বস্ত হন সবাই। কৃতজ্ঞতা জানান সেখানে উপস্থিত মুসলিমরাও। মুসলিমরা রীতিমতো হাততালি দিয়ে তাঁদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক এই প্রসঙ্গে বলেন, ২৫ ফুট তাজিয়ার একেবারে উপরে যে আগুন লেগেছে তা শোকমিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বুঝতে পারেনি। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সেই শোকযাত্রা দেখতে থাকা এক হিন্দু পরিবারের কয়েকজন সদস্যর প্রথম নজরে আসে।
তাঁরাই উপর থেকে জল ঢেলে আগুন নেভান। বড়সড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। ওই আধিকারিক আরও বলেন, সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল মুসলিমদের তাজিয়া আগুন লাগতে দেখে যেভাবে একটি হিন্দু পরিবার রীতিমতো ঝাঁপিয়ে পড়ে আগুন নেভানোর কাজ করেছে, এবং যেভাবে সেখানে উপস্থিত মুসলিমরা তাঁদের এই কাজের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন তা সম্প্রীতির এক অনবদ্য বার্তা ছড়িয়ে দেবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যে ভারতের সবথেকে বড় শক্তি তা ফের দেখিয়ে দিল এই ঘটনা।