পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : দলিত হয়ে মন্দিরে পুজো দেওয়াই ছিল অপরাধ! আর তাই এই চরম অপরাধের শাস্তি দিতে দ্বিধা করেননি তথা কথিত উচ্চ শ্রেণিরা। নেমে ছিল চরম অত্যাচার। তিনজন দলিতকে প্রথমে এলোপাথাড়ি মার আর তারপরেই কুপিয়ে খুন করা হয়। তামিলনাড়ুতে ২০১৮ সালের এই হাড়হিম করা নারকীয় ঘটনায় ২৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বিশেষ আদালত। শুক্রবার তফসিলি জাতি ও উপজাতি প্রতিরোধ আইনে এই মামলার শুনানি হয়।
মৃত তিনজনের নাম ৬৫ বছরের অরুমুগাম, ৩১ বছরের শনমুঙ্গানাথন এবং ৩৪ বছরের চন্দ্রশেখর। এই তিনজনই তামিলনাড়ুর শিবগঙ্গা জেলার কাচনাথাম গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
২০১৮ সালের ২৮ মে ওই তিনজন দলিতের উপরে নেমে আসে এই নির্যাতনের ঘটনা। অপরাধ ছিল মন্দিরে ঢুকে পুজো দেওয়া। কেন ওই তিনজন দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ মন্দিরে ঢুকে পুজো দিলেন। কেন এত দুঃসাহস হল, সেই প্রশ্ন তুলেই চড়াও হয় কয়েকজন উন্মত্ত মানুষ। সমস্ত ক্রোধ, রাগ, হিংস্রতা গিয়ে পড়ে তিনজন দলিত মানুষের উপরে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকাতে তারা। সেই দিনই তিনজনের মৃত্যু হয়। জখম হন ৩২ বছরের থানাসেকেরণ নামে এক যুবক। দেড় বছর পর মৃত্যু হয় তারও। আহত হয় আরও বেশ কয়েকজন দলিত।
এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এই মামলায় পুলিশ আভারঙ্গাদু গ্রামের সুমন, অরুণকুমার, চন্দ্রকুমার, অগ্নিরাজ এবং রাজেশ সহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছিল। এদের মধ্যে চার অভিযুক্ত ছিল নাবালক।
তদন্ত চলাকালীন দুজনের মৃত্যু হয়। পুলিশের খাতায় একজনকে ‘নিখোঁজ’ বলে জানানো হয়। শুরু হয় মামলা। চার বছর পরে মামলার শুনানিতে মোট ২৭ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করল আদালত। অত্যন্ত স্পর্শকাতর মামলা হওয়ায় আদালত জুড়ে ছিল কড়া নিরাপত্তা।