ইনামুল হক, বসিরহাট: অবশেষে জমি জট কাটিয়ে বাদুড়িয়ার ইছামতী সেতুর অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ হতে চলেছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে সেতুর সঙ্গে বাদুড়িয়ার দিকে রাস্তা জুড়ে গেলেই উদ্বোধন হবে এটি। এমনই ইঙ্গিত পাওয়া গেল ব্রিজের জমি জট নিয়ে বুধবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলা শাসক শরদ কুমার দ্বিবেদীর উপস্থিতিতে বাদুড়িয়ায় একটি প্রশাসনিক বৈঠক থেকে।
প্রসঙ্গত , বসিরহাট মহকুমার বাদুড়িয়া ব্লকের ইছামতী নদীর উপর লক্ষীনাথপুর ও ফরিদকাটির মধ্যে ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৬৪ ফুট লম্বা ও ১৮ ফুট চওড়া একটি ব্রীজের মূল অংশের কাজ সম্পন্ন হয়েছে ২০১৭ সালে। লক্ষ্মীনাথপুর এর দিকে ব্রিজের প্রশস্ত রাস্তার জন্য জমি নিয়ে সমস্যা ছিল। ব্রিজের মাঝখান থেকে বাদুড়িয়া বাজার পর্যন্ত ১৫ একর জমি রয়েছে। তার মধ্যে সাড়ে দশ একর জমি অধিগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। সাড়ে চার একর জমি নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল।
সেই সমস্যা দ্রুত মেটাতে বুধবার বাদুড়িয়া পুরসভার কমিউনিটি হলে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা শাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী, জেলা পরিষদের পূর্তের কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ গোস্বামী, কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ বুরহানুল মুকাদ্দিম, বিধায়ক কাজী আব্দুর রহিম দিলু, বাদুড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান দীপঙ্কর ভট্টাচার্য্য, বসিরহাটের মহকুমা শাসক মৌসম মুখার্জি সহ জেলার পূর্ত ও সড়ক বিভাগের আধিকারিকরা বৈঠক করেন জমিদাতাদের সঙ্গে। বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয় যে সেখানে তাদের সঠিক জমির মূল্য দিয়ে সরকার তা অধিগ্রহণ করে নতুন ১.৯ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করবে।
এদিন তার আগে জেলাশাসক, মহকুমা শাসক, পুর প্রধান, সহ জনপ্রতিনিধিরা ব্রিজের রাস্তার জমি সমস্যা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। জেলাশাসক জানান, চলতি বছরের নভেম্বর মাস থেকে রাস্তার কাজ শুরু হবে এবং দেড় বছরের মধ্যে সেই কাজ সম্পন্ন হয়ে ব্রিজ সম্পূর্ণ ভাবে চালু হবে।
বলা বাহুল্য, বাদুড়িয়া ব্রিজের জমি সমস্যা নিয়ে প্রয়াত পুরো প্রধান তুষার সিংহ স্থানীয় বিধায়ক কাজী আব্দুর রহিম দিলু, বুরহানুল মোকাদ্দিম লিটন প্রমুখরা একাধিকবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। জেলা প্রশাসনকে দ্রুত জমি জট কাটিয়ে ও রাস্তা তৈরি করে মানুষের জন্য এই সেতু চালু করে দিতে হবে, এমনটাই নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে এই সেতুর কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর চালু হয়ে গেলে একদিকে বসিরহাট ও বাদুড়িয়ার সঙ্গে কলকাতার দূরত্ব কমবে।
পাশাপাশি ভারতের দ্বিতীয়তম বৃহত্তম স্থলবন্দর ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত যেখানে প্রতিদিন প্রায় হাজারখানেক পণ্যবাহী ট্রাকের আনাগোনা হয় তারও এক বিকল্প পথ তৈরি হবে।
অন্যদিকে বাদুড়িয়ার মূল শহরের সঙ্গে কাটিয়াহাট, পূঁড়ো বাজার সহ একাধিক গ্রামের স্থলপথে সংযোগ স্থাপন হবে। খেয়ায় নদী পারাপারের হাত থেকে রেহাই পাবে বাজার, অফিস, কাছারি, হাসপাতালের রোগী ও পরিবারের লোকজন, ছাত্র-ছাত্রী সহ নৃত্য-যাত্রীরা। স্বাভাবিকভাবে রাস্তা নিয়ে এই জমি সমস্যার সমাধান হয়ে যাওয়ায় খুশির হাওয়া জমিদাতা থেকে শুরু করে বাদুড়িয়ার বাসিন্দাদের মধ্যে।