পূবের কলম ওয়েবডেস্কঃ চিনের উচ্চাভিলাষী ও অত্যাধুনিক ‘সিল্ক রোড’ প্রকল্পের অপর নাম ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ (বিআরআই)। এর মাধ্যমে স্থল ও জলপথে বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরির অবকাঠামো নির্মাণের লক্ষ্য নিয়েছে চিন। চিনের এই অবকাঠামো উন্নয়ন কৌশল সফল হলে পশ্চিমা বিশ্বের জন্য তা হবে এক ধাক্কা।
কারণ, আন্তর্জাতিক মঞ্চে চিনের একাধিপত্যকে তখন আর মোকাবিলা করা যাবে না। সুদীর্ঘ এক শিপিং লেনের যাত্রাপথকে ঘিরেই প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করার পরিকল্পনা চিনের। এবার চিনের অগ্রযাত্রা থামাতে বা চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোডের পালটায় নতুন উদ্যোগ নিয়েছে জি-৭ জোট। নতুন পরিকল্পনায় ৬০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের (৬০০ বিলিয়ন) তহবিল গঠনের কথা জানিয়েছে জি-৭।
বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশগুলো নিয়ে গঠিত জি-৭ দেশের নেতারা রবিবার জার্মানিতে বৈঠক করেন। সেখানে ৬০ হাজার কোটি ডলারের পরিকাঠামো তহবিল ছিল প্রথম ঘোষণা। বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘এই বিনিয়োগের ফলে সবাই উপকৃত হবে। এমনকী আমেরিকার জনগণও।
সার্বিকভাবে সবাই অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করতে চাই এটি কোনও সাহায্য নয়। একটি বিনিয়োগ যা প্রত্যেককেই রিটার্ন করা হবে।’ এই পরিকল্পনায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে অবকাঠামো প্রকল্প চালু করতে পাঁচ বছরের মধ্যে ৬০ কোটি মার্কিন ডলারের তহবিল সংগ্রহ করতে জি-৭ নেতাদের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ দিকে জি-৭ সম্মেলনে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেন, চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পের টেকসই বিকল্প গড়ে তোলার জন্য পাঁচ বছরের ওই একই সময়সীমায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার বা ৩০ হাজার কোটি ইউরো সংগ্রহ করবে ইউরোপ। জি-৭ তহবিল থেকে অ্যাঙ্গোলায় ২০০ কোটি ডলারের সোলার ফার্ম, ৩২ কোটি ডলার দিয়ে আইভরি কোস্টে হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে।
৪ কোটি মার্কিন ডলার দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিকল্প শক্তি বাণিজ্যকে উৎসাহ দেওয়া হবে। প্রকল্পটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি, লিঙ্গ সমতা অর্জন এবং ডিজিটাল অবকাঠামো নির্মাণে সহায়ক হবে। পশ্চিমা দেশগুলো বেজিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে, চিন এই প্রকল্পের মাধ্যমে দরিদ্র দেশগুলোকে ঋণজালে আবদ্ধ করছে।
এভাবে দেশটি এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপে বাণিজ্য বিস্তারের সুযোগ পাচ্ছে। এবারের জি-৭ বৈঠক থেকে মূলত চিন ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সুর তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। চিনের পাশাপাশি রাশিয়াকে কোণঠাসা করার আহ্বান জানিয়েছেন জি-৭ নেতারা। সম্মেলনের আগে ঘোষণা আসে, আমেরিকা, জাপান, কানাডা ও ব্রিটেন রাশিয়া থেকে স্বর্ণ আমদানি নিষিদ্ধ করছে। এর ফলে রাশিয়ার উপর আরও চাপ তৈরি করা যাবে বলে মনে করছে ব্রিটেন।