পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার অনেক আগেই ইসরাইলের বর্তমান সংসদ ভাঙতে বসেছে। ফলে চার বছরের মধ্যে পঞ্চমবারের মতো সাধারণ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা দেশটিতে। শাসক জোটের নেতারা নির্বাচনের ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন। আগামী ২৫ অক্টোবর এই নির্বাচন হতে পারে।
ইসরাইলের ক্ষমতাসীন জোটের নেতারা সংসদ ভেঙে দেওয়ার জন্য আগামী সপ্তাহে একটি বিল পেশ করবেন। বিলটি অনুমোদিত হলেই নির্বাচন হবে। ইসরাইলের ক্ষমতাসীন জোট বিবৃতিতে বলেছে, জোটকে স্থিতিশীল করার ও টিকিয়ে রাখার সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর, প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট এবং বিদেশমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদ আগামী সপ্তাহে সংসদ ভেঙে দেওয়ার একটি বিল পেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদি বিলটি পাস হয় তবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট নয়, কেয়ারটেকার সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন লাপিদ। কারণ, জোটের শর্ত অনুসারে, সরকারের পূর্ণাঙ্গ মেয়াদের অর্ধেক সময় বেনেট ও অর্ধেক সময় লাপিদ প্রধানমন্ত্রী থাকবেন।
মতাদর্শগতভাবে বিভক্ত ৮ দলীয় জোটটি এক বছর আগে তৈরি হয় এবং এতে জাতীয়তাবাদী ইয়ামিনা পার্টির বেনেট, লাপিদের মধ্যপন্থী ইয়েশ আতিদ পার্টি, বামপন্থী ও ইসরাইলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আরব ইসলামপন্থী দলের সাংসদরাও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এপ্রিল মাসে ইয়ামিনা পার্টির একজন সদস্য জোটত্যাগ করায় ইসরাইলের ১২০ আসনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় বেনেটের সরকার। এ দিকে, জোট ভেঙে যাওয়ায় দেশটির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আশায় বুক বাঁধছেন।
তিনি বলছেন, আবারও নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় ফিরবে তাঁর লিকুদ পার্টি। উল্লেখ্য, বেনেট ও লাপিদের ক্ষমতাসীন জোটটি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর শাসনের অবসান ঘটিয়ে ক্ষমতায় আসে। তবে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে বিভিন্ন বিষয়ে অভ্যন্তরীণ বিবাদ ইসরাইলি জোট সরকারকে ভেতর থেকে দুর্বল করে দিয়েছে। বিল পাস করার ক্ষমতাও হারিয়েছে সরকার। সর্বশেষ ২০২১ সালের নির্বাচনে দেশটিতে একটি ঝুলন্ত পার্লামেন্ট তৈরি হয়েছিল। যেখানে নেতানিয়াহুর ডানপন্থী ব্লকের কিংবা বিরোধী দলের নতুন সরকার গঠনের জন্য পর্যাপ্ত আসন ছিল না।
এর ফলে রক্ষণশীল ইয়ামিনা, ২টি আরব রাজনৈতিক দল তথা জয়েন্ট লিস্ট এবং ইউনাইটেড আরব লিস্ট পার্লামেন্টে (নেসেট) সম্ভাব্য কিংমেকার হিসাবে আবির্ভূত হয়। ইয়ামিনা নেতা নাফতালি বেনেট সরকার গঠনের আগে বলেছিলেন, তাঁর প্রথম পছন্দ একটি ডানপন্থী সরকার গঠন। আর তাঁর দ্বিতীয় পছন্দ ছিল একটি বৃহত্তর ‘জাতীয় ঐক্য সরকার’ প্রতিষ্ঠা করা, যাতে মাত্র দুই বছরের মধ্যে পঞ্চম নির্বাচন এড়ানো যায়।