পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ ভয়াবহ বন্যার কবলে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা। ওই দুই অঞ্চলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ। বন্যার জেরে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে সুনামগঞ্জ শহর। দুই জেলায় প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মনে অনুমান। প্রশাসন সূত্রে খবর, বন্যার জেরে সিলেটের ওসমানি বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্যায় আটকে পড়া মানুষজনকে উদ্ধার করতে সিলেট ও সুনামগঞ্জের ৮টি উপজেলায় সেনা নেমেছে।
সুনামগঞ্জের জেলাশাসক মুহাম্মদ জাহাঙ্গির হোসেন জানান, আটকে পড়াদের কীভাবে উদ্ধার করা হবে সেটাই প্রধান বিষয়। বলেন, ‘ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বর্ষণের জন্য বৃহস্পতিবার রাত থেকে ১২ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে চার ফুট পানি বেড়ে যায়। জেলা শহরের সব রাস্তায় পানি জমেছে। কোথাও বুক সমান পানি এবং কোথাও তার চেয়েও বেশি পানি জমেছে। সুনামগঞ্জের সঙ্গে যোগাযোগের হাইওয়েগুলিও পানির তলায়। ফলে শহর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।’
বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের আধিকারিক আরিফুজ্জামান জানিয়েছেন, মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ১২২ বছরে এটি সর্বোচ্চ রেকর্ড। সেই বৃষ্টির পানি দ্রুত গতিতে সুনামগঞ্জ এবং সিলেট অঞ্চলে নেমে এসেছে। সেজন্য অল্প সময়ে সিলেট অঞ্চলে ভয়াবহ রুপ নিয়েছে বন্যা। মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত আছে এবং আগামী কয়েকদিনে সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার আরও অবনতি হতে পারে বলে জানান।
বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশের উত্তরে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট এবং নীলফামারী-সহ কয়েকটি জেলাতেও আগামী কয়েকদিন বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার একটি ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মুরাদ হোসেন বন্যার পানির কারণে পরিবার-সহ তার বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পানি নেই এমন এক ইঞ্চি জায়গা নেই সুনামগঞ্জে। আরও বলেন, ‘আমাদের এলাকায় প্রতিটা ঘরবাড়ি পানির নিচে। ঘরবাড়ির চালের ওপর দিয়ে পানি যাচ্ছে। মানুষের আশ্রয় নেয়ার জায়গা নাই। দ্রুত উদ্ধারকাজ না হলে লাশের মিছিল দেখা যাবে।’