পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: করোনা আবহ কাটিয়ে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে নাগরিক জীবন। কোভিডের সময় সবচেয়ে বড় কোপ পড়েছিল অর্থনৈতিক অবস্থায়। তলানিতে পৌঁছেছিল অর্থনীতি। এর অন্যতম প্রধান কারণ ছিল করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চাকরির বাজার। কোম্পানিগুলি বন্ধ থেকে কর্মচারী ছাঁটাই অন্যতম বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এমনকী ওয়ার্ক ফর্ম চালু হওয়ার ফলে মূল বেতনের পরিবর্তে বহু কোম্পানিতে আধা বেতনে কাজ করতে হয় কর্মীদের। তবে বর্তমানে সেই অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল। গত ৮ বছর পর ফের কাজের বাজারে অনেকটা সুদিন আসছে বলেই মনে করা হচ্ছে। বহু কোম্পানির কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ফের তারা নতুন করে কর্মী নিয়োগে তৎপরতা শুরু করেছে।
এক সমীক্ষায় বলা হচ্ছে, বড় বড় কোম্পানিগুলি ফের জুলাই-সেপ্টেম্বরের দিকে নতুন এমপ্লয়ি নিয়োগে জোর দিয়েছে। ফলে কর্মসংস্থান বাড়তে পারে বলেই পূর্বাভাস রয়েছে। করোনা আবহ কাটিয়ে কাজের বাজারে এটি অত্যন্ত আশাপ্রদ খবর বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ম্যানপাওয়ার গ্রুপ এমপ্লয়মেন্ট আউটলুকের সার্ভে করে দ্য ইকনমিক্স টাইম’স এক সমীক্ষায় জানাচ্ছে, ৬৩ শতাংশ নিয়োগকর্তার বক্তব্য অনুযায়ী আগামী তিনমাসের মধ্যে তারা ৩০৮০ কর্মচারী নিয়োগ করতে চলেছে। ১২ শতাংশের মত নতুন কর্মচারী নিয়োগ করার কোনও ইচ্ছে নেই। ২৪ শতাংশের মতামত কোম্পানিতে যা কর্মচারী আছে তা পর্যাপ্ত। ১ শতাংশের মতে কোম্পানির নতুন কর্মচারী নিয়োগের বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। অন্যদিকে ৫১ শতাংশের মতে কোম্পানি কর্মচারী কমানোর দিকে ঝুঁকছে।
সমীক্ষা অনুযায়ী, গত বছর এই সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে নিয়োগ প্রায় ৪৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতে নিয়োগের বাজারগুলি এই অঞ্চলে প্রথম এবং বিশ্বব্যাপী তৃতীয় স্থানে রয়েছে৷ ৪০টি দেশের আনুপাতিক হারে ভারতে ২০২১ সালের মধ্যবর্তী সময়ে নিয়োগ ২৮ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে।
ম্যানপাওয়ার গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সন্দীপ গুলাটি বলেছেন, সামগ্রিকভাবে সেক্টর ও শিল্পের ক্ষেত্রে একটি আশাপ্রদ দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বরাবরের মতোই আইটি ও আইটিইএস সেক্টরগুলি চাকরির বাজার বৃদ্ধিতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে।
সমীক্ষা অনুযায়ী আগামী তিনমাসে ১১টি শিল্পে বেতন বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। আইটি, প্রযুক্তি, টেলিকম, মিডিয়া সেক্টরে ৬৮ শতাংশ নিয়োগ হতে পারে। অন্যদিকে ব্যাংকিং, ফিনান্স, বিমা, রিয়েল এস্টেটে ৬০ শতাংশ নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। অলাভজনক সেক্টরগুলিতে ২৫ থেকে ৩৫ শতাংশ নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।
ম্যানপাওয়ার ট্যালেন্ট শর্টেজ-এর সমীক্ষা অনুযায়ী নয়া কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তারা চাহিদা ও যোগানের মধ্যে একটি ব্যবধান লক্ষ্য করে। তবে সেক্টরজুড়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রকৃত দক্ষতাসম্পন্ন কর্মচারী খুঁজতে একটা কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। সমীক্ষা অনুযায়ী ৭৫ শতাংশ নিয়োগকর্তার মতে, কোম্পানিগুলি গত ১৬ বছরে দক্ষ কর্মচারী খুঁজতে গিয়ে কঠিন অবস্থার মধ্যে পড়েছে। ৮৩ শতাংশ নিয়োগকর্তার মতে ভারতে সবচেয়ে সমস্যা হয় শূন্যপদে নিয়োগ।
শীর্ষ পাঁচটি সফ্ট স্কিল যা সংস্থাগুলিকে খুঁজে পেতে সবচেয়ে অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয় তা হল সৃজনশীলতা এবং মৌলিকতা, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং বিশ্লেষণ, যুক্তি এবং সমস্যা সমাধান নেতৃত্ব এবং সামাজিক প্রভাব, এবং উদ্যোগ নেওয়া।