পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় আজ ফের ইডির মুখোমুখি রাহুল গান্ধি। গতকালের পর আজ জেরা চলছে। সূত্রের খবর, আজও এই জেরার সময় বাড়তে পারে। যথারীতি জেরার দেড় ঘন্টা সময় অতিক্রান্ত হয়েছে। গতকালও ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলা ম্যারাথান জেরার মুখে পড়েন রাহুল গান্ধি। দু দফায় তাকে জেরা করা হয়। প্রথমে সাত ঘন্টা পরে তিন ঘন্টা মোট ১০ ঘন্টার জেরা হয়।
এদিকে এই ঘটনায় উত্তপ্ত দিল্লি। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা। আটক করা হয়েছে রণদীপ সিং সূরযেওয়ালা-সহ বহু কংগ্রেস নেতৃত্ব ও কর্মীবৃন্দ।
আগামী বুধবারও রাহুলকে ইডি দফতরে যেতে হবে বলে জানা গেছে। এই মামলায় সমন জারি করা হয়েছে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধির ওপরও। কোভিডে আক্রান্ত সোনিয়া বর্তমানে দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালে ভর্তি। ২৩ জুন ইডি দফতরে তাঁর হাজির হওয়ার কথা।
কংগ্রেস আগেই ঘোষণা করেছিল, সমন মেনে ইডি দফতরে রাহুলের হাজিরার দিন সারা দেশে সত্যাগ্রহ পালন করা হবে। সেই অনুযায়ী বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেস নেতা–কর্মীরা সত্যাগ্রহ আন্দোলনে শামিল হন। কেন্দ্রের উদ্দেশে কটাক্ষ করে কংগ্রেসের দাবি, পুরনো এই মামলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে ইডি নতুন করে মামলার তদন্ত শুরু করেছে।
সোমবার ১০টা নাগাদ তাঁরা হেঁটে এ পি জে আবদুল কালাম রোডে ইডির নতুন অফিসের উদ্দেশে রওনা হন। রাহুলের সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি, মল্লিকার্জুন খাড়গে, পি চিদাম্বরম, জয়রাম রমেশ, কে সি বেনুগোপাল, রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল, লোকসভা সদস্য অধীর চৌধুরী, দেপিন্দর সিং হুডা, দলের অন্যতম মুখপাত্র পবন খেরাসহ অনেকে। কিছুটা পথ যাওয়ার পর দিল্লি পুলিশ মিছিলের পথ আটকায়। রাহুল–প্রিয়াঙ্কা গাড়িতে চেপে ইডি অফিসে চলে যান। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় তুঘলক রোড থানায়। বাধা পেয়ে কংগ্রেস কর্মীরা সেখানেই অবস্থান সত্যাগ্রহ শুরু করেন।
ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্রটি শুরু করেছিলেন জওহরলাল নেহরু। অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেড প্রকাশ করত সংবাদপত্রটি। বাজারে এই সংস্থার ৯০ কোটি টাকা দেনা ছিল। তা বেশিরভাগটাই দিয়েছিল কংগ্রেস। ২০০৮ সালে বন্ধ হয় প্রকাশনা। সেই অবস্থাতেই সংস্থাটি অধিগ্রহণ করে ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড’ সংস্থা। সেটির মাথায় ছিলেন সোনিয়া, রাহুল এবং শীর্ষস্থানীয় কংগ্রেস নেতারা। এর পর ন্যাশনাল হেরাল্ডের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি ইয়ং ইন্ডিয়ানের দখলে চলে আসে। ৯০ কোটি টাকা দেনার বোঝাও চাপে তাদের ঘাড়ে। কিছুদিন পর দেনার টাকা উদ্ধার সম্ভব নয় বলে ঋণ মকুব করে দেয় কংগ্রেস। তার পরেই মামলাটি ফের তোলেন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী।