‘পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ এবং অপসারণের ক্ষেত্রে কিছু সফলতা এসেছিল, কিন্তু স্নায়ুযুদ্ধের পর পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি গত কয়েক দশকের মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি’। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট
বিশেষ প্রতিবেদনঃ ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে নড়েচড়ে বসেছে আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্ব। এদিকে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। সব নিয়ে নিরাপত্তা উদ্বেগ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। এর মাঝে কয়েকবার রাশিয়া, আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলি পরমাণু যুদ্ধের সম্ভাবনার কথা বলেছে।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ দ্রুত হারে বাড়বে বলে মনে করছে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট। সংস্থাটি (এসআইপিআরআই) বলছে, ইউক্রেনে রুশ অভিযানের ফলে বিশ্বব্যাপী যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে তা স্নায়ুযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ আবারও বাড়াতে পারে। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, ইউক্রেনে রুশ হামলা ও কিয়েভের প্রতি পশ্চিমা সমর্থন বিশ্বের ৯টি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা তৈরি করেছে।
ইউক্রেনে চলমান অভিযানের মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকিও দিয়ে রেখেছে রাশিয়া। মার্চের শুরুতে রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছিলেন, ‘যদি একটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়, তাহলে এতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহৃত হবে। যা হবে ধ্বংসাত্মক’। এই পরিস্থিতিতে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড্যান স্মিথ বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ এবং অপসারণের ক্ষেত্রে কিছু সফলতা এসেছিল, কিন্তু স্নায়ুযুদ্ধের পর পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি গত কয়েক দশকের মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি’।
গত বছর বিশ্বব্যাপী থাকা আনুমানিক ১২ হাজার ৭০৫টি পারমাণবিক ওয়ারহেডের মোট সংখ্যা সামান্য হ্রাস পেয়েছে। বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রায় ৯০ শতাংশই আমেরিকা ও রাশিয়ার কাছে রয়েছে। পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা সম্পর্কে যা জানা গেছে তার পুরোটাই অনুমানের ভিত্তিতে। ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টের মতে, রাশিয়ার কাছে ৫ হাজার ৯৭৭টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে।
এগুলি দিয়ে ভয়াবহ পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটানো সম্ভব। এর মধ্যে প্রায় ১৫০০ পরমাণু ওয়ারহেড পরিত্যক্ত হওয়ার পথে। এদিকে আমেরিকার কাছে মোট রয়েছে ৫৪২৮টি পরমাণু ওয়ারহেড। বিশ্বের পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলি হল চিন, ফ্রান্স, ভারত, ইসরাইল, উত্তর কোরিয়া, পাকিস্তান, রাশিয়া, আমেরিকা ও ব্রিটেন। পারমাণবিক অস্ত্র না বাড়ানোর এনপিটি চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ১৯১টি দেশের তালিকায় রয়েছে চিন, ফ্রান্স, রাশিয়া, আমেরিকা ও ব্রিটেন।