পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) কার্যনির্বাহী বোর্ডের সভায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ চার পশ্চিমা দেশ ইরানের বিরুদ্ধে যে প্রস্তাব উত্থাপন করেছে তা ছিল হঠকারি ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ। এমন অভিযোগ তুলেছেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেইন আমির-আধুল্লাহিয়ান। রাষ্ট্রসংঘ প্রধান অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে রবিবার এক ফোনালাপে তিনি এ মন্তব্য করেন। চিন ও রাশিয়ার বিরোধিতা সত্ত্বেও গত বুধবার ভিয়েনায় আইএইএর সদর দফতরে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির উত্থাপিত ইরানবিরোধী একটি প্রস্তাব পাস হয়। ইরানের অঘোষিত জায়গায় পরমাণু সামগ্রী খুঁজে পাওয়া নিয়ে ইরানের সমালোচনা করে একটি প্রস্তাব পাশ করা হয়েছিল ওই বৈঠকে।
ইরানের বিদেশমন্ত্রী ইয়েমেনে ঘোষিত যুদ্ধবিরতির মেয়াদ নবায়নে তার দেশের সমর্থনের কথা উল্লেখ করেন এবং দেশটির ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার দাবি জানান। গুতেরেসের সঙ্গে কথা বলার সময় ইরানের বিদেশমন্ত্রী সিরিয়ার অভ্যন্তরে ইসরাইলের অব্যাহত হামলার নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ইসরাইল সিরিয়ার বেসামরিক স্থাপনাগুলোতে বিশেষ করে দামেস্কের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলা চালিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বিপন্নকারী ইসরাইলি পদক্ষেপ প্রমাণ করছে, এ অঞ্চলের দেশগুলোকেই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অ্যান্তোনিও গুতেরেস ইরানের পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবন সংক্রান্ত ভিয়েনা সংলাপের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা হচ্ছে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট সমাধান। ইরানের পরমাণু স্থাপনার আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএর কিছু ক্যামেরা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বাড়তি সহযোগিতার অংশ হিসেবে ইরান যেসব ক্যামেরা বসানোর অনুমতি দিয়েছিল, সেগুলোর বিদ্যুতের সুইচ বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থা। তবে এখনো পরমাণু স্থাপনায় আইএইএর ৮০ শতাংশ ক্যামেরা সচল রয়েছে। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি যে শান্তিপূর্ণ তা নজরদারি করতে পরমাণু স্থাপনাগুলোতে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা ক্যামেরা বসিয়ে রেখেছে। আইএইএর নীতিমালা অনুযায়ী, যেসব ক্যামেরা অপরিহার্য, সেগুলো এখনো বন্ধ করা হয়নি। পরমাণু স্থাপনার কয়েকটি ক্যামেরা বন্ধের ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থা। এতে দেখা যাচ্ছে, পরমাণু স্থাপনার ক্যামেরার সুইচ বন্ধ করছেন সেখানে কর্মরত দুই ব্যক্তি। আইএইএর বোর্ড অব গভর্ন্সের বৈঠকে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি ইরানের প্রতি অযৌক্তিক আচরণ করায় এই পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তেহরান।