পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: আচমকা ভারী বৃষ্টির জেরে ভূমিধস ও বন্যার কবলে অসম। সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কাছাড় জেলা। সেতু, রাস্তা, ট্রেন লাইন জলের তলায়। আংশিক বা পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে বহু ট্রেন। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে একাধিক এলাকা। শিলচর-গুয়াহাটি রোডে ধসের কারণে তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে এখনও পর্যন্ত পাওয়া অনুযায়ী কাছাড় জেলায় তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে রয়েছে একশিশু।
অসমের রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর জানিয়েছে, ভূমিধস ও বন্যার জেরে এতটাই ক্ষতি হয়েছে যে শুধুমাত্র কাছাড় জেলাতেই ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৪১ হাজার মানুষ। জেলা প্রশাসনের তরফে প্রায় ১৬৫৮ মানুষকে বিভিন্ন নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে। প্রায় ২০০টি মতো বাড়ির ক্ষতি হয়েছে।
উদ্ধারকার্যে নেমেছে এসডিআরএফ, দমকল, ইমাজেন্সি সার্ভিস, ও ভারতীয় নৌ-সেনা। একটি সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে অসমের সাতটি জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৫৭ হাজার মানুষ।
আগামী ১৭ তারিখ পর্যন্ত লামডিং-বদরপুর রোডে ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। অসমের ডিমা হাসাও জেলায় ভারী বর্ষণে প্রবল ভূমিধসের কারণে ত্রিপুরা, মিজোরাম এবং দক্ষিণ অসমের সঙ্গে সংযোগকারী ২৫ জোড়া ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে।
অসমের একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ভূমিধসের কারণে শিলচর-গুয়াহাটিতে যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। উত্তর-পূর্ব ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ে ও ভারতীয় সেনা রবিবার আটকে পড়া ১৫০০ যাত্রীকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে আসে। হাইওয়েতে জলের স্তর বেড়ে যাওয়ায় হাফলং এবং শিলচরের মধ্যে যোগাযোগও বিঘ্নিত হয়েছে। টানা বর্ষণে হাফলং শহরের বেশ কিছু এলাকা জলের তলায়।
রবিবার জটিঙ্গা নদীতে এক শিশু সহ তিনজন ভেসে যাওয়ার খবর মেলে। এর মধ্যে রবিবারই দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পরে সোমবার এক শিশুর দেহ উদ্ধার হয়। তবে বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ।
অসমের এই আকস্মিক বন্যায় গুরুত্বপূর্ণ রেল ও সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত।
ভূমিধসের কারণে যানজট তৈরি হয়েছে বহু জায়গায়। বোরখোলা বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক ডা. রুমি নাথ শিলচর-গুয়াহাটি সড়কে যানজটে আটকে পড়েন। ডা. রুমি নাথ জানিয়েছেন, বহু জায়গায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে।
বন্যায় ২২২টি গ্রামের ১০৩২১.৪৪ হেক্টর চাষের জমির ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির মুখে পড়েছে পশুরাও। ব্যাপক ভূমিধস ও বন্যার কারণে ডিটোকচেরা রেলওয়ে স্টেশনে আটকা পড়েছেন বেশ কিছু যাত্রী। ভারতীয় নৌ সেনা ১১৯ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে শিলচরে নিয়ে আসে বাকিদের বদরপুর ও শিলচর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।