পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: হঠাৎ গতিমুখ পরিবর্তন করল ঘূর্ণিঝড় অশনি। ক্রমশ শক্তি ক্ষয় করে এই গতিবেগ পরিবর্তন বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। আবহবিদদের পূর্বাভাস অনুযায়ী অশনি ল্যান্ডফল করবে সম্ভবত অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া উপকূলে। এমনই পূর্বাভাস দিয়েছেন বিশাখাপত্তনম সাইক্লোন ওয়ার্নিং সেন্টারের ডিরেক্টর সুনন্দা৷ অন্ধ্রপ্রদেশে জারি হয়েছে লাল সতর্কতা।
ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের (আইএমডি) সতর্কবার্তা অনুযায়ী, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা সহ পশ্চিমবঙ্গের গাঙ্গেয় উপকূলবর্তী এলাকায় থেকে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এছাড়াও অশনির তাণ্ডবে অন্যত্র মাঝারি বৃষ্টিপাত চলবে। বৃহস্পতিবার ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূলে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস। মঙ্গলবার রাত ২.৩০-এর রিপোর্ট অনুযায়ী অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ৬০ কিলোমিটার, কাকিনাড়া থেকে ১৮০ কিলোমিটার, বিশাখাপত্তনম থেকে ৩১০ কিলোমিটার দূরে ছিল অশনি। বুধবার এই খবর লেখা পর্যন্ত অন্ধ্রপ্রদেশের মছলিপত্তনম থেকে ৪০ কিলোমিটার ও গোপালপুর থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে আছে অশনি। ঘন্টায় ৬ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছে এই ঘূর্ণিঝড়। আইএমডি’র পূর্বাভাস অনুসারে, অশনি ধীরে ধীরে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগোচ্ছে। এরপর ইয়ানাম, কাকিনাড়া এবং বিশাখাপত্তনম উপকূল বরাবর অগ্রসর হয়ে এবং উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা উপকূল থেকে পশ্চিম মধ্য এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা। এর পর আস্তে আস্তে শক্তি হারিয়ে অশনি একটি শক্তিশালী নিম্নচাপে পরিণত হবে ১২ মে। ইতিমধ্যই, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ৩৭টি ট্রেন বাতিল করেছে সাউথ সেন্ট্রাল রেলওয়ে। বেশ কয়েকটি ট্রেনের সময়সূচী পরিবর্তন করা হয়েছে।
অশনির কারণে ভারতীয় আবহ বিভাগের পক্ষ থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া, গনগাভরম এবং ভিমুনিপট্টনম বন্দরে দশ নম্বর বিপদ সঙ্কেত জারি করা হয়েছে৷ বিশাখাপত্তনম, পূর্ব গোদাবরী, পশ্চিম গোদাবরী, কৃষ্ণ এবং গুণ্টুর জেলায় ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে৷ প্রবল হাওয়া ও ভারী বৃষ্টির জেরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়েছে হাওয়া অফিস৷ কাঁচা বাড়ি সহ রাস্তাঘাটের ক্ষয়ক্ষতিরও আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন আবহবিদরা৷ পাশাপাশি ধান, কলা, পেঁপে গাছের বাগান সহ ফল চাষেরও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে৷
অন্ধ্রপ্রদেশে এনডিআরএফ-এর ৯টি দল ও এসডিআরএফ-এর ৯টি দলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের ১৩ মে পর্যন্ত সমুদ্রে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী রাজ্যে সরাসরি এই ঘূর্ণিঝড়ের তেমন প্রভাব পড়বে না। পশ্চিমবঙ্গের দুই ২৪ পরগনা সহ দুই মেদিনীপুর ও নদিয়ায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গেও ১১ থেকে ১৫ মে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে।