ওবাইদুল্লালস্কর, ডায়মন্ডহারবারঃ মা আমার প্রথম স্তনদানকারিনী ,প্রথম জগৎ ,প্রথম আলো ,প্রথম অনুভূতি ,প্রথম ভালোবাসা । মা র হাত ধরে প্রথম হাঁটা শুরু । প্রথম পথ চলা ,আজও চলেছি । প্রথম ‘অ ,আ ‘ শেখা তাঁর কাছে । তিনি আমার প্রথম শিক্ষিকা ।
আমি শৈশবে পিতৃহারা । তাই তিনি একাই বাবা ও মা । প্রথম গ্ৰামের পাঠশালায় গিয়েছি তাঁর হাত ধরে । দুষ্ট ছেলের কাণ্ডকারখানা হাজার কষ্ট দিলেও মা হাসি মুখে আদর দিয়ে ,স্নেহ দিয়ে আমার সব কিছুকে ভুলিয়ে দিতে চান । তখন মা বিশ্বের সুখী ,নিরাপদতম স্থান, সকল দুঃখের হয় অবসান । এমন সুন্দর ,পবিত্রতম স্থানের তুলনা কেবল তিনি নিজেই ।
আমার মনে আছে একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কান্নাকাটি জুড়ে দিলাম রুটি চাই বলে । মা জেঠিমার কাছ থেকে একখানা বাসি রুটি এনে দিলেন আমার হাতে । আমার কান্না থামার কোন লক্ষণ নেই ,আরো বেড়েই চলল । ওই রুটিতে অনেক ভাঁজ ছিল বলে রেগে গিয়ে পুকুরে ছুঁড়ে দিলাম । মা রেগে গিয়ে আমাকে একটুও বকেনি । তিনি শুধু বলেছিলেন ‘একদিন দেখবি আমি মরে গেলে তোর জন্যে পথের শিয়াল ,কুকুর কাঁদবে ।’ জানতাম না এ কথার তখন কি মানে ছিল । এখন মনে হয় মা র কাছে কেন যে এতো দুষ্টুমি করতাম ,কেন যে এতো কাঁদতাম । এখন খুব অনুশোচনা হয় ; যদি শান্ত ছেলে হতাম । আমার ব্যথা মা বোঝেন কিন্তু তাঁর ব্যথা কেবল তাঁর একার ।
আজ বিশ্বমাতৃ দিবসে মায়ের প্রতি রইল আমার বিনম্র শ্রদ্ধা ও শতকোটি প্রণাম ।