পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ক্রমশই ঘনীভূত হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় অশনি। ভারতের আবহাওয়া দফতর (আএমডি)শনিবার ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি করেছে। আইএমডি জানিয়েছেন, আন্দামান ও তৎসলগ্ন দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরের উপর একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। এই নিম্নচাপটি রবিবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এই ঘূর্ণিঝড়টি প্রথমে অন্ধপ্রদেশ ও ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আগামী মঙ্গল ও শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের গাঙ্গেয় উপকূলবর্তী সংলগ্ন জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ওড়িশা সরকারে পক্ষ থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা ও দমকল বাহিনীকে তৈরি থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, নিম্নচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে হয়ে এবং পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা।
আবহাওয়া দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, এটির উপকূলে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা আগামী ১০ মে। তবে কোথায় ল্যান্ডফল করবে তা নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়। আছড়ে পড়ার সময় ঝড়ের গতিবেগ কত থাকবে তাও এখনই বলা যাচ্ছে না।
ওড়িশা স্পেশাল রিলিফ কমিশনার পি কে জানা জানান, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৭টি টিমকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে ২০টি ওড়িশা ডিজাস্টার র্যা পিড অ্যাকশন ফোর্স, ১৭৫ টি দমকল বাহিনী প্রস্তুত আছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে আরও ১০টি টিম তৈরি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী এবং কোস্টগার্ডগুলিকে। ওড়িশার ১৮টি জেলার কালেক্টরদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে জ্বালানি বিভাগ এবং টেলিকম পরিষেবা প্রদানকারীরা টাওয়ারগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই সেগুলিকে মেরামতির দিকে নজর দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঝড়ের সময় সাধারণ মানুষের প্রবণতা থাকে নারকেল, আম কোড়ানোর। এই সময়ে ঘরের বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।
আইএমডি জানিয়েছে ৭ মে নিম্নচাপটি সুস্পষ্ট হবে। এই নিম্নচাপের ওপরেই নির্ভর করবে ল্যান্ডফলের জায়গা। ৯ মে সমুদ্রে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে সমুদ্রে এই ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার।
দমকল বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল এস কে উপাধ্যায় জানিয়েছেন, সমস্ত দমকলকর্মীদের ছুটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, পর পর ঘূর্ণিঝড় তাণ্ডবের সাক্ষী আছে ওড়িশা। ২০২১ হয় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস, ২০২০ তে হয় আমফান, ফনী হয় ২০১৯। ফলে ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় জোরকদমে তৈরি ওড়িশা সরকার।