নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: প্রত্যাশামতোই কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতিদের অপ্রতুলতার বিষয়টি নিয়ে সরব হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার নয়াদিল্লিই’র বিজ্ঞান ভবনে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতিদের সম্মেলনে কলকাতা হাইকোর্টে প্রয়োজনের তুলনায় কম সংখ্যক বিচারপতি থাকার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ’৭২ জন বিচারপতি থাকার কথা থাকলেও মাত্র ৩৯ জন বিচারপতি রয়েছেন। ১৩ জন বিচারপতিকে নিয়োগের বিষয়ে অনুমতি চেয়ে সুপারিশ পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু মাত্র একজনকে নিয়োগ করা হয়েছে।’
এদিন সম্মেলনের এক ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। অন্য কোনও বিষয় নিয়ে কথা হয়নি। তাছাড়া কথা বলার মতো পরিস্থিতিও ছিল না।’
দীর্ঘ ছয় বছর বাদে এদিন রাজধানীর বিজ্ঞান ভবনে মুখ্যমন্ত্রী ও বিভিন্ন রাজ্যের হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিদের সম্মেলন বসেছিল। উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা। ‘চিফ মিনিস্টার্স-চিফ জাস্টিসেস কনফারেন্স অন জুডিশিয়ারি’ শীর্ষক ওই সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কলকাতা হাইকোর্টে ৭২ জন বিচারপতি থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে মাত্র ৩৯ জন বিচারপতি রয়েছেন। আমরা ছ’মাস আগে ১৩ জনের তালিকা পাঠিয়েছিলাম। মাত্র একজনের অনুমতি পেয়েছি।’
কলকাতা হাইকোর্টের নতুন ভবনের জন্য ইতিমধ্যেই নিউটাউনে ১০ একর জমি বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। যদিও ওই জমি পর্যাপ্ত নয় বলে হাইকোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘৫ একর জমিতে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠছে। তাহলে হাইকোর্টের ক্যাম্পাস কেন গড়ে উঠবে না? এর চেয়ে বেশি জমি পেতে হলে আরও একটু দূরে যেতে হবে। তাছাড়া হাইকোর্টের পুরনো ভবনটি বন্ধ করা হবে না, সেটিও কাজ করবে। কারণ, এটি হেরিটেজ বিল্ডিং।’ নিউটাউনে হাইকোর্টের নতুন ক্যাম্পাসে যেতে আইনজীবীরা রাজি না হওয়ায় তিনি যে ক্ষুব্ধ তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা।
জলপাইগুড়িতে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের কাজকর্ম সম্পূর্ণ হয়নি বলে খুশি নয় কলকাতা হাইকোর্ট কর্তৃপক্ষ।
এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘ইতিমধ্যে জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চ কাজ শুরু করে দিয়েছে। উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমের বাসিন্দারাও সেখানে বিচারের জন্য আসছেন।’ সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্তে বৈঠকের সম্ভাবনা নেই।
এদিন অবশ্য সম্মেলনের এক ফাঁকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মিনিট ১৫ আলাদা কথা বলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। দুজনের মধ্যে কী নিয়ে কথা হল, তা জানতে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের মধ্যে আগ্রহ ছিল তুঙ্গে।
সূত্রের খবর, আদালতে আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহারের উপরে জোর দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী যে সওয়াল করেছেন, তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।