পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : ইউক্রেন ইস্যু নিয়ে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দেশটির অপরিশোধিত তেল রফতানি বেশ কয়েকগুণ বেড়েছে। নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দমানো যায়নি মস্কোকে। বাণিজ্য তথ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ট্যাঙ্কার ট্র্যাকার্স ও কেপলারের তথ্যানুযায়ী, রাশিয়ার বন্দরগুলো থেকে প্রতিদিন ১৬ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রফতানি হচ্ছে, যা মার্চ মাসের তুলনায় তিন লক্ষ ব্যারেল বেশি। মার্চ মাসে রাশিয়া থেকে প্রতিদিন গড়ে ১৩ লক্ষ ব্যারেল তেল রফতানি হয়েছে। কেপলার জানিয়েছে, মধ্য-মার্চে রাশিয়া থেকে যেখানে প্রতিদিন দশ লক্ষ ব্যারেল তেল রফতানি হয়েছে, সেখানে এপ্রিল মাসে প্রতিদিন গড়ে ১৩ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রফতানি হচ্ছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, রাশিয়ার বন্দর থেকে জাহাজগুলো অজানা গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছে এবং ইউরোপীয় ব্যবসায়ীরাই রুশ তেল গোপনে কিনছেন। এপ্রিল মাসে এভাবে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ১১ লক্ষ ব্যারেল তেল বিক্রি হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে জাহাজগুলো পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী কোনও নির্দিষ্ট রুটে রওনা দেয়নি। তেল বিক্রির বর্তমান পরিমাণ যুদ্ধ শুরুর আগের পরিমাণের প্রায় সমান। নিত্যপণ্য বিশ্লেষক জিওভানি স্টনোভা বলেন, ‘রাশিয়ার তেলের ওপর ইইউয়ের পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞা আরোপের অর্থ হবে আগামীকাল থেকে আপনার বেতন শতকরা ৪০ ভাগ কমে যাবে এবং আপনাকে এমনভাবে জীবনযাপন করতে হবে যেন কিছুই হয়নি। এরই মধ্যে রাশিয়ার তেলে ব্যাপক ছাড় দেওয়া হবে, অনেকে বিষয়টিকে আকর্ষণীয় মনে করে লুফে নেবে।’ মার্চ মাসের প্রথম দিকে রাশিয়ার তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আমেরিকা। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো এ বিষয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়া থেকে তাদের চাহিদার শতকরা ২৭ ভাগ তেল আমদানি করে। সম্প্রতি ইইউ’র বিদেশনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধের বিষয়ে প্রস্তাব তোলা হলে তাতে জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও হাঙ্গেরি ভেটো দিতে পারে। অন্যদিকে, পোল্যান্ড ও ফ্রান্স সক্রিয়ভাবে তেল আমদানি নিষিদ্ধ করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ইউরোপের বাজার না পেলে এশীয় বাজারে অপরিশোধিত তেল বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন।