আবদুল ওদুদঃ ২০২২ সালে পবিত্র হজের কোটা ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় হজ কমিটি। সউদি আরব জানিয়েছে, এ বছর তারা ভারত থেকে ৭৯২৩২জনকে হজ করতে অনুমতি দিচ্ছে। দেশের কোটা কত হবে, তা সরকারিভাবে জানার পরই কেন্দ্রীয় হজ কমিটি তা সংবাদমাধ্যমকে জানায়।
শুক্রবার কেন্দ্র শাসিত রাজ্য-সহ ৩২টি রাজ্যের রাজ্য ভিত্তিক হজের কোটা ঘোষণা করা হল। কেন্দ্রীয় হজ কমিটির মাধ্যমে এবছর ৫৫ হাজার ১৬৪জন হজযাত্রী হজ করতে যেতে পারবেন। এছাড়াও প্রাইভেট ট্যুর অপারেটরের মাধ্যমে হজ করার সুযোগ পাবেন প্রায় ২৪ হাজার হজযাত্রী। কেন্দ্রীয় হজ কমিটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, সব থেকে বেশি হজযাত্রী যাবে উত্তরপ্রদেশ থেকে। উত্তরপ্রদেশ থেকে এ বছর ৮৮৩৬জন হজ করতে যেতে পারবেন। এরপরই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, সেখান থেকে ৬২৬৬ জন হজে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
পশ্চিবঙ্গ রাজ্য হজ কমিটির তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার পর্যন্ত এ রাজ্যে ৭৪৮৯জনের আবেদন জমা পড়েছে। কিন্তু সউদি আরবের নির্দেশনা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় হজ মন্ত্রক ৬৫ বছর উর্দ্ধের ব্যক্তিদের হজযাত্রা এ বছর বাতিল করায় রাজ্য থেকে প্রায় ২৬০০টি আবেদন খারিজ করা হয়েছে। ফলে আশা করা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের যা কোটা দেওয়া হয়েছে তাতে সমস্ত আবেদনকারী এবছর হজ সম্পন্ন করার সুযোগ পাবেন।
করোনা পরিস্থিতিতে গত ২ বছর খুবই সীমিত আকারে পবিত্র হজ পালিত হয়েছে। এ বছর পরিস্থিতি খানিকটা স্বাভাবিক হওয়ায় বিশ্বের প্রতিটি মুসলিম দেশের হজযাত্রীরা হজের সুযোগ পাচ্ছেন। তবে সউদি হজ মন্ত্রক প্রত্যেক দেশের হজের কোটা কিছুটা কমিয়ে দেওয়ায়, এদেশেরও হজের কোটা কমেছে। ভারত থেকে সব মিলিয়ে ৭৯,২৩২জন হজ করার সুযোগ পাবেন। কেন্দ্রীয় হজ কমিটির মাধ্যমে ৫৫,১৬৪জন হজ সম্পন্ন করতে পারবেন। বাকিরা প্রাইভেট টু্যর অপারেটরের মাধ্যমে হজ সম্পন্ন করতে যাবেন।
কেন্দ্রীয় হজ কমিটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে এবছর হজের কোটা দেওয়া হয়েছে ৫১৯৬, কর্ণাটক ২৬৬০, কেরলা ৫৭৪৭, মহারাষ্ট্র ৪৬৩২, রাজস্থান ১৯৯৪, ঝাড়খণ্ড ১৫০১, বিহার ২৩৬৭, অসম ৩৪২১, ওড়িশা ৪৮৪, দিল্লি ৭৯৭, ত্রিপুরা থেকে ১১১জন হজযাত্রী এবার হজে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৬২৬৬ জন হজযাত্রার সুযোগ পেলেও এ রাজ্য থেকে ১০ হাজারের কিছু বেশি হজ করতে যাবেন। বাংলা ছাড়াও বিহার ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং ত্রিপুরার হজযাত্রীরা কলকাতা বিমান বন্দর থেকে পবিত্র ভূমি মক্কার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য হজ কমিটি কার্যনির্বাহি আধিকারিক মুহাম্মদ নকি জানান, হজযাত্রার জন্য আবেদনপত্র জমা নেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, এবছর হজের খরচ আনুমানিক ৪ লাখ টাকার মতো হতে পারে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে ২৮ এপ্রিলের পর। ওইদিন কেন্দ্রীয় হজ কমিটির আরও একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, তারপর অর্থের সঠিক পরিমাণ জানা যাবে। হজের টাকা জমা ও এ রাজ্যের হজযাত্রার প্রস্তুতি কবে, তাও জানা যাবে ২৮ এপ্রিলের পরে।
রাজ্য হজ কমিটি জেলা ডোমা অফিসারদের সঙ্গে নিয়ে প্রাথমিক কাজ শুরু করে দিয়েছে। এখন কেন্দ্রের অনুমতি পেলে চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে। জনাব নকি বলেন, তবে বিভিন্ন এনজিও-র মাধ্যমে যে সমস্ত প্রশিক্ষণ চলছে সেগুলিতে প্রত্যেক হজযাত্রীকে অংশগ্রহণ করার আবেদন জানান। তিনি বলেন, আশা করছি রাজ্যে যারা এ বছরের হজের জন্য আবেদন করেছেন তাঁরা প্রত্যেকেই হজের সুযোগ পাবেন। অন্যান্য রাজ্যে হজে আবেদন প্রার্থী বেশি হওয়ায় লটারি হলেও বাংলায় লটারি হওয়ার সম্ভবনা খুবই কম।
আশঙ্কা করা হয়েছিল, হয়তো ভারতের হজ-কোটা অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে। তা কিন্তু হয়নি। স্বাভাবিক সময়ের অর্ধেকেরও বেশি ভারতীয় নাগরিক এবার হজে যেতে পারছেন। আর পশ্চিমবঙ্গ থেকে তো যে আবেদনকারীরা আবেদন করেছেন তাদের প্রায় প্রত্যেকেই যেতে সক্ষম হতেন। কিন্তু হঠাৎ করে বয়সের উর্দ্ব সীমা ৬৫ বছর স্থির করে দেওয়ায় ২০০০-রও বেশি আবেদনকারী হজে যাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।