পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : ফের হামলা চালাল দখলদার ইসরাইলিরা। রবিবার মসজিদুল আকসায় হামলা চালায় তারা। এই হামলায় কমপক্ষে ১৯ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পবিত্র রমযানে শুক্রবার আল আকসা মসজিদে হামলা চালায় ইসরাইলিরা। কমপক্ষে ১৫০ জন মুসল্লি আহত হয়েছিলেন। তারা অনেকেই এখনও হাসপাতাল ভর্তি। তারই মাঝে রবিবার ফের হামলা চালালো দখলদাররা। আল কুদস এমনিতেই ইসরাইলি মিলিটারির দখলে। ইসরাইলিরা নতুন করে নানাভাবে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই রমযানেই নতুন করে তারা অশান্তি বাধাতে চাইছে, বলে অভিযোগ।
রবিবার সকালেই আল কুদসে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পরে বহু ইসরাইলি সেনা। তারা সেখানে তালমুদ নিয়ে প্রার্থনা শুরু করে দেয়। এই প্রার্থনার আসল উদ্দেশ্য কি তা বুঝতে বাকি নেই কারও। ইসরাইলি দখলদার আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে তালমুদ পাঠ করে বোঝাতে চেয়াছে আল কুদস তাদেরই। এর দখল তারা ছাড়বে না।
ইহুদিদের ধর্মীয় উপলক্ষটি এবার রমজান মাসের সঙ্গেই পালিত হচ্ছে। ফিলিস্তিনি মুসলিমরা পবিত্র মাসে এই পবিত্র জায়গাতেই বেশি সময় কাটাতে চান। দিনরাত তারা এখানে ইবাদত করতে চান। দখলদারদের হামলার ভিডিও সামনে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে ইসরাইলি সেনা ফিলিস্তিনিদের হঠাতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছে। একইসঙ্গে ফিলিস্তিনিদের দিকে লক্ষ্য করে চেতনাশক গুলি ছুড়তেও দেখা গিয়েছে ইসরাইলি সেনাদের। এর পাল্টা ফিলিস্তিনদের হাতে পাথর ছোড়া ছাড়া আর কোনও বিকল্প ছিল না।
ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) বলেছে পবিত্র স্থানে ইসরাইলি অভিযানের ঠিক পরেই কমপক্ষে ১৭ জন আহত হন। তাদের চিকিৎসা চলছে। যার মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফিলিস্তিনি ওয়াফা নিউজ বলছে, আসলে দখলদার ইসরাইলিরা চেয়েছিল আল আকসা মসজিদে ঢুকে প্রার্থনার ছলে নিজেদের দখলদারি মজবুত করতে। নিজেরা হামলা চালালেও ইসরাইলি পুলিশ অবশ্য তিনজন ফিলিস্তিনিকেই গ্রেফতার করে।
আল আকসায় ইসরাইলিরা যে কান্ড করেছে তার তীব্র সমালোচনা করেছে হামাস। তারা বলেছে আল আকসা আসলে রেড লাইন। দখলদাররা সেই দাগ অতিক্রম করে গিয়েছে। তারা মুসল্লিদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা মসজিদকে অপবিত্র করার চেষ্টা করেছে। যে কাজ তারা করেছে তার ফল তাদের ভুগতে হবে। হামাস আরও বলেছে দখলদাররা আল-আকসা মসজিদে হামলা এবং মাজারগুলিকে অপবিত্র করার মদত আসলে তেল আবিব সরকারের কাছ থেকে পায়। হামাস বলে দখলদাররা যা করছে তাতে ফিলিস্তিনি ও আরবদের পাশাপাশি গোটা মুসলমান উম্মাহ ক্রোধে ফুঁসছে।
প্রতি বছর রমযান মাসের শেষ শুক্রবার আল-কুদস দিবস বা আন্তর্জাতিক আল-কুদস দিবস পালিত হয়ে থাকে। ১৯৭৯ সালে ইরানে তা শুরু হয়েছিল। এই দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে একাত্মতা প্রকাশ, জায়নবাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ এবং ইসরাইল কর্তৃক জেরুযালেম দখলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ। জেরুযালেম শহরের অপর নাম ‘কুদস’ বা ‘আল-কুদস’। এই আল-কুদস দিবস যাতে পালিত না হয় তার জন্য এখন থেকেই সবরকম ছক কষতে শুরু করেছে ইসরাইল।