পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ঘোষণা করেছে যে ইউক্রেন যুদ্ধে তার নৌযান মস্কোভা ডুবে যাওয়ার পর ইতিমধ্যেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছে। যদিও রাশিয়া বলেছে আগুন লাগার পর এটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেন দাবি করছে তারা নেপচুন ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে মস্কোর কৃষ্ণ সাগরে রুশ জাহাজটি ধ্বংস করেছে। মস্কোভা ছিল গাইডেড মিসাইল ক্রুজার। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শুক্রবার বলেছে, তারা ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাতারাতি কিয়েভের প্রান্তে ইউক্রেনের একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। ইউক্রেন যেভাবে রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে তার প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনের রাজধানীতে আরও হামলা হবে বলে জানিয়েছে রাশিয়া।
প্রশ্ন হচ্ছে মস্কোভা ডুবে যাওয়ায় কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ছে রাশিয়া? উত্তরে বলা যেতে পারে, এই মুহূর্তে কৃষ্ণসাগরে রণতরীটির জায়গা নেওয়ার মতো কোনও জাহাজ পুতিন বাহিনীর হাতে নেই। ১৯৮২ সালে রুশ নৌসেনায় যুক্ত হওয়ার পর থেকেই গোটা নৌবহরের জন্য মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমের কাজ করছিল জাহাজটি।
যুদ্ধর শুরু থেকেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে এসেছে আমেরিকা । একই পথে হেঁটেছে বিভিন্ন ইউরোপের দেশগুলিও। ইউরোপে জ্বালানির সিংহভাগ আসে রাশিয়া থেকে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে ব্যবহৃত গ্যাসের ৪০ শতাংশ এবং ব্যবহৃত তেলের ২৫ শতাংশই আসে রাশিয়া থেকে। এবার সেখানেই কোপ বসানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। যা নিয়ে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়ার গ্যাস ও তেলের বিকল্প খুঁজতে গেলে ইউরোপকে বড়সড় মূল্য চোকাতে হবে। কারণ এই মুহূর্তে ইউরোপের হাতে সেরকম কোনও বিকল্প নেই বলে দাবি পুতিনের। অন্য দেশ থেকে, বিশেষ করে আমেরিকা থেকে তেল আনতে গেলে অনেক বেশি খরচ হবে ইউরোপের দেশগুলির। যার ফলে চাপ বাড়বে সেদেশের গ্রাহকদের উপর।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আমেরিকার যৌথ সিদ্ধান্তে রাশিয়ার পেট্রোপণ্যে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় ক্ষতির মুখে পড়েছে মস্কো। সেকথা অবশেষে স্বীকার করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলি জানিয়েছে যে, তারা আর কোনও ভাবেই পেট্রোপণ্য কিনে ক্রেমলিনকে আর্থিক সাহায্য করবে না। তেল ও গ্যাসের জন্য ইউরোপের দেশগুলি রাশিয়া নির্ভরতা পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে না পারলেও পুতিন স্বীকার করেলেন যে, নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়ার খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবসা ক্ষতির মুখে পড়েছে। পেট্রোপণ্যের রফতানি হ্রাস হওয়ায় শিল্পের খরচও বেড়েছে। ফলে রাশিয়া যে খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থায় আছে সে কথা বলা যাবে না। তাছাড়া পশ্চিমারা নানাভাবে ইউক্রেনকে সাহায্য করছে বলেও জানা যাচ্ছে। যদিও তা নিয়ে রাশিয়া ন্যাটোকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছে।