পুবের কলম প্রতিবেদক: ‘মোটা অঙ্কের তোলা দিতে না পারায় খুনের হুমকি আসছে প্রতিদিন। ২৮ বছর জনসেবার পর মনে হচ্ছে আমি এ মাটির কেউ নই। খুনের আতঙ্কে দিন কাটছে আমার।’ কথাগুলো সমাজসেবী জাহির ইসলামের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতায় তিনি পরিচিত সমাজকর্মী। দুস্থ-অসহায় মানুষের সেবাকে জীবনের ব্রত মনে করে গড়ে তুলেছেন দি সহরারহাট নার্সিংহোম। যেখানে দুস্থদের স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা করা হয়। শ’দুয়েকের মতো মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এছাড়া এই চিকিৎসাকেন্দ্রকে আশ্রয় করে স্থানীয় বহু মানুষের রুটিরুজির আয়োজন হয়। কিন্তু অসাধু কিছু ব্যক্তির লোভ জাহির সাহেবকে আতঙ্কে রেখেছে।
নার্সিংহোম মালিক জাহির ইসলামের অভিযোগ, রাজনৈতিকভাবে ষড়যন্ত্র করে প্রশাসন তাঁর ১৫০ বেডের নার্সিংহোম বন্ধ করে দেয় কিছুদিন আগে। দীর্ঘ প্রশাসনিক টানাপোড়েনের পর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সহযোগিতায় ১ মার্চ থেকে নতুন উদ্যোমে নার্সিংহোম শুরু করেছিলেন। হাসি ফুটে ছিল কর্মচারীদের মুখে। দিন কুড়ি না পেরোতেই আবার হেনস্থার সম্মুখে। এরই মধ্যে গত সপ্তাহে দি সরহারারহাট নার্সিংহোমে ফলতার পুলিশ আধিকারিক, বিডিও এবং রাজনৈতিক জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতি।
আতঙ্ক তৈরি হয় কর্মচারী ও রোগী পরিবারের মনে। নার্সিংহোম মালিক বলেন, জেলা দফতর থেকে ওইদিন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা ভিজিট-এ এসেছিলেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক প্রতিনিধিরা কেন এসেছেন?
জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, কেবলমাত্র জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে প্রতিনিধিদের পাঠিয়েছিলেন। স্থানীয় প্রশাসনের বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই বা যেতে বলেননি।
মালিক কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, তাহলে কেন স্থানীয় প্রশাসন বা রাজনৈতিক নেতারা নার্সিংহোমে এসেছেন? এই বেআইনি উপস্থিতি রোগী পরিবার ও কর্মচারীদের মধ্যে রীতিমতো আতঙ্ক সৃষ্টি করে চলেছে।
উল্লেখ্য, কোভিড সময়ে তিনি তার নার্সিংহোমকে ‘কোভিড হাসপাতাল’ হিসেবে সরকারকে দান করেন। একমাস পর ‘কোভিড যোদ্ধা’ হিসেবে তাঁকে সার্টিফিকেট দেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। জেলায় প্রথম ভ্যাকসিনের সূচনাও হয় এখান থেকে। অথচ অজানা কারণে তাঁর কাছে তোলা চাওয়া হচ্ছে।
না দিলে খুনের হুমকি আসছে দুষ্কৃতীদের থেকে। জাহির ইসলামের অভিযোগ, বৈধ অনুমোদন তদারকির নামে জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে শুরু করে পুলিশ প্রশাসন বারবার হানা দিচ্ছে নার্সিংহোমে। স্থানীয় রাজনৈতিক অসাধু কিছু ব্যক্তি এর সঙ্গে জড়িত বলে তিনি দাবি করেন। বৈধ কাগজ থাকা সত্ত্বেও তাঁকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।