পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ ভারত সফরে আসছেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। সম্ভবত এই সপ্তাহেই আসার সম্ভাবনা রয়েছে তার।
৩০ দিন পার হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধে আবহে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রীর ভারত সফর অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ। ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ। পুরনো সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে রাশিয়া বিদেশমন্ত্রীর আগমন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
সূত্রের খবর, এই সফরে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করতে পারেন রুশ বিদেশমন্ত্রী। অপরিশোধিত তেল আমদানির বিষয়ে দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীর মধ্যে কথা হতে পারে। আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের জারি করা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েছে রাশিয়ার অর্থনীতিতে। সেদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সব নিয়ে কথা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মনে করা হচ্ছে এই সফরের মূল লক্ষ্য থাকবে দিল্লির মস্কো থেকে তেল এবং সামরিক হার্ডওয়্যার সংগ্রহের জন্য অর্থপ্রদানের ব্যবস্থা। সূত্রের খবর, রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ দুদিনের চিন সফর শেষ করে বৃহস্পতিবার অথবা শুক্রবার ভারতে আসবেন। তবে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক অথবা রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে প্রস্তাবিত সফরের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও কথা জানানো হয়নি।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া তার সামরিক অভিযান শুরু করার পরে রাশিয়ার থেকে ভারতে এটিই প্রথম সফর।
ভারতের কাছের বন্ধু হিসাবেই পরিচিত রাশিয়া। কিন্তু সম্প্রতি ইউক্রেনের উপর পুতিনের দেশের আক্রমণের জেরে বহু দেশ বিপক্ষে গিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেনের দ্বন্দ্ব প্রভাব ফেলেছে গোটা বিশ্বে। এমনকি এই যুদ্ধ নিয়ে ভারত কার পক্ষে এই কথা জানতে চাওয়া হলেও সুকৌশলে এড়িয়ে গেছে ভারত।
যুদ্ধের পর থেকে একাধিকবার নরেন্দ্র মোদি রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে বার্তালাপ সারেন। ইউক্রেনে আটক পড়ুয়াদের দেশে ফেরানো নিয়েও কথা হয়।
শুরু থেকেই যুদ্ধ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মস্কো এবং কিয়েভের মধ্যে সরাসরি আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে ভারত।
গত সপ্তাহে, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সংসদে বলেছিলেন যে ইউক্রেন সংঘাতের বিষয়ে ভারতের অবস্থান “অটল এবং ধারাবাহিক” এবং এটি অবিলম্বে হিংসা বন্ধ করার চেষ্টা করছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জে ইউক্রেন-রাশিয়া রেজোলিউশনে ভোটাভুটিতে বিরত থেকেছিল ভারত। যুদ্ধের এক মাস পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইউক্রেনের মানবিক সঙ্কট নিয়ে রাশিয়ার আনা প্রস্তাবের ভোটাভুটি থেকে বিরত থাকে দিল্লি। ওই প্রস্তাব ইউক্রেনের প্রতি সমালোচনামূলক বলে মনে করা হয়েছিল। প্রস্তাবটি প্রয়োজনীয় ভোট না পাওয়ায় খারিজ হয়ে যায়। বিরত থাকার মাধ্যমে নয়াদিল্লি ইঙ্গিত দেওয়া চেষ্টা করেছে যে, মস্কোর অবস্থানের সঙ্গে ভারত সহমত নয়।