নিজস্ব প্রতিনিধি: ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে রামনবমী ঘিরে নজিরবিহীন উদ্দীপনার সাক্ষী থেকেছিল রাজ্য। রামচন্দ্রকে সামনে রেখে হিন্দুত্বের আবেগে সুড়সুড়ি দিতে সক্ষম হয়েছিলেন কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিসেবে পরিচিত বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, হিন্দু জাগরণ মঞ্চের পদাধিকারীরা।
রামনবমী ঘিরে সেই নজিরবিহীন উদ্দীপনার ফসল ঘরে তুলেছিল বঙ্গ বিজেপি। এক লাফে সাংসদ সংখ্যা দুই থেকে আটেরোতে পৌঁছেছিল। মাঝে করোনা সংক্রমণের কারণে দুবছর (২০২০ ও ২০২১) রামনবমী পালনে কিছুটা ভাঁটা পড়েছিল। হিন্দুত্বের আবেগও ফের ঝিমিয়ে পড়েছে। ফের হিন্দুত্বের অস্ত্রে শান দিতে আগামী মাসের রামনবমীকে ফের হাতিয়ার করতে চলেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সহ একাধিক হিন্দু সংগঠন।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই রামনবমীকে ঘিরে জেলায়-জেলায় প্রস্তুতি নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। রামনবমীকে ঘিরে যাতে ফের হিন্দুত্বের জাগরণ ঘটানো যায়, তার জন্য জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, মালদা, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহারের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, নদিয়া, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
ইসলামপুরে রামনবমীতে দুলক্ষ হিন্দুর জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে জেলার বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতৃত্ব। সূর্য সেন স্পোর্টিং ক্লাব ময়দানে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে যৌথভাবে রামনবমীর উৎসব পালন করবে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেলিয়া মোড় থেকে রঙ্গিলাবাদ পর্যন্ত মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। বহরমপুরের ওয়াইএমএ ময়দানে ওই দিন বড় জমায়েতের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ির পাণ্ডাপাড়া দুর্গাপুজোর মাঠেও বিশাল জমায়েতের জন্য কোমর কষে ঝাঁপানো হয়েছে। কৃষ্ণনগরেও বড় জমায়েতের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। কোথাও রামনবমী জন্মোৎসব সমিতির নামে, কোথাও আবার বজরং দল কিংবা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নামে রামচন্দ্রের জন্মতিথি পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
করোনা সংক্রমণ উঠে যাওয়ার কারণে যাতে রামনবমী ঘটা করে পালন করা যায়, তার জন্য চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখছেন না বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলের নেতারা। আসানসোলে যেহেতু লোকসভার ভোট তাই ওই অঞ্চল ছেড়ে রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে যাতে অন্তত একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যায়, সেদিকেই নজর দিয়েছেন উদ্যোক্তারা। রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা শচীন্দ্রনাথ সিংহের কথায়, ‘দু’বছর ঘরোয়াভাবে রামনবমী পালন করা হয়েছিল। চলতি বছর যেহেতু বিধিনিষেধ নেই, তাই সাড়ম্বরেই রামনবমী পালন করা হবে। প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। হিন্দুত্বের স্বাভিমান জেগে উঠুক, তা চাইছি। রাজ্যে যেভাবে জেহাদি কর্মকাণ্ড বাড়ছে, তাতে নিজেদের সুরক্ষার দায়িত্ব হিন্দুদের নিতে হবে। পুরুষোত্তম রামের মতোই বীরবিক্রমে লড়তে হবে।’ রামনবমীতে অস্ত্র মিছিল হবে কিনা, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার জেলা নেতৃত্বের উপরেই ছাড়া হয়েছে।