পুবের কলম প্রতিবেদক– কুলতলি কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের কবলে পড়েছিলেন। সঙ্গীদের উপস্থিত বুদ্ধি ও সাহসের জোরে প্রাণে বাঁচলেন এক যুবক। গুরুতর জখম অবস্থায় বর্তমানে কলকাতার পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সুrদরবনের আজমলমারি ৩ নম্বর কোম্পারমেন্টে। আক্রান্তের নাম— আবু তালেব পিয়াদা (৩৫)। বাড়ি কুলতলির দেউলবাড়ি দেবীপুর অঞ্চলের দেউলবাড়ি গ্রামে।
পরিবার ও বন দফতর সূত্রে জানা যায়– আবু তালেব পিয়াদা কুলতলি বিট অফিস থেকে বৈধ পাস নিয়ে সোমবার জনা তিনেক মৎস্যজীবীকে নিয়ে সুন্দরবনের আজমলমারি ৩ নম্বর কোম্পারমেন্টে কাঁকড়া ধরতে যায়। বুধবার কাঁকড়া ধরার সময় আচমকা একটি বাঘ আবু তালেবের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঘটনার আকস্মিকতায় হতচকিত হয়ে পড়ে সঙ্গীরা। ঘোর কাটিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে সঙ্গী মইমুর খান– আজিম মণ্ডলরা। তাদের অসীম সাহসিকতায় দীর্ঘ সময় বাঘে-মানুষে লড়াইয়ে পর রণে ভঙ্গ দেয় দক্ষিণরায়। তড়িঘড়ি আবু তালেবকে নৌকায় তুলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় তারা। খবর দেয়— স্থানীয় বিট অফিস ও জয়নগর কুলতলি গ্রামীণ হাসপাতালে। নদীপাড় থেকে তাকে বাইকে করে নিয়ে যাওয়া হয় কুলতলির জয়নগর-কুলতলি গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পথে রোগির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কুলতলি থেকে ২০ কিমি দূরে স্থানীয় জয়নগর স্পrদন মেটার নিটি অ্যান্ড নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে কলকাতার পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বুধবার রাতে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অবধি তার অবস্থা স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
এদিকে– বাড়িতে স্ত্রী– পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলে। অভাবের সংসারে একমাত্র রোজগেরে এখন মৃতু্যর পথযাত্রী। নদী-জঙ্গলে মাছ-মধু সংগ্রহ করে যাদের দিন চলে সেই পরিবার এখন পড়েছে চরম দুশ্চিন্তায়। ৬ সন্তানকে নিয়ে কীভাবে সংসার চালাবেন ভেবে পাচ্ছেন না আবু তালেব পিয়াদার স্ত্রী। ‘জনগণের পাঠশালা’ সংগঠনের পক্ষে সমরেrদু চক্রবর্তী অসহায় মৎস্যজীবী পরিবারের পাশে থাকার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেন। এপিডিআর সুrদরবনের বাঘে আক্রান্ত মানুষদের পাশে নিয়ে কাজ করে চলেছে। তাদের জয়নগর শাখা সম্পাদক মিঠুন মণ্ডল বৃহস্পতিবার বলেন– ‘বিকল্প কর্মসংস্থানই একমাত্র পারে তাদের ঝুঁকির জীবন থেকে মুক্তি দিতে।’ সরকারি ক্ষতিপূরণ থেকে বাঘ-আক্রান্তরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে তাঁর অভিযোগ।