নসিবুদ্দিন সরকার– হুগলি জেলায় জেলায় কৃষিজমি থেকে আলু তুলতে শুরু করেছে কৃষকরা। বেশ কয়েক বারের প্রাকৃতিক দুর্যোগে অবশ্য এ মরসুমে ফলন অনেকটাই কম। ঘাটতি মেটাতে ভিন রাজ্য থেকে আলু আমদানি করা হচ্ছে। সেই আলু সংরক্ষণ করা হচ্ছে বিভিন্ন হিমঘরে। ঘাটতি মেটানোর পাশাপাশি অধিক মুনাফা ও হিমঘর ভরানোর জন্য অন্যান্য রাজ্য থেকে আলু আমদানি করা হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। সূত্রের খবর– হিমঘর মালিক– বড় বড় ব্যবসায়ী এবং মজুতদাররা উত্তরপ্রদেশ– মধ্যপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে আলু আমদানি করে বর্ধমান– হুগলি-সহ বিভিন্ন জেলার হিমঘরে সংরক্ষণ করছে।
উল্লেখ্য– এই মরসুমে প্রথম পর্যায়ে আলু বীজ রোপণ করার পরেই নিম্নচাপজনিত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বীজ নষ্ট হয়ে যায়। আবার দ্বিতীয়বার বীজ রোপণ করতে অনেক দেরি হয়ে যায়। অনেক জমিতে বীজ-ই বসানোই যায়নি। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গেছে– হুগলি জেলায় গত বছর ৮৮ হাজার ৯৪৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ৩৫ লক্ষ মেট্রিক টন। এবারে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আলু চাষের জমির পরিমাণ কমে ৭৩ হাজার ৬১৪ হেক্টরে দাঁড়ায়। জেলায় উৎপাদিত আলুর পরিমাণ ১৪ থেকে ১৬ লক্ষ মেট্রিক টন হতে পারে।
জেলার কৃষকরা জানাচ্ছেন– বিঘাপ্রতি ৪০ থেকে ৬০ বস্তার মধ্যে আলু হচ্ছে। গত বছর বিঘাপ্রতি ১০০ বস্তা করে আলু উৎপাদন হয়েছিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অসময়ে আলু চাষের কারণে চলতি মরশুমে ফলনে ব্যাপক মার হয়েছে বলে কৃষকদের অভিমত। ফলনে ঘাটতি– তাই আলুর দাম বেশি। জমি থেকে আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা প্রতি ৫০ কেজি বস্তা। শুধু হুগলি জেলায় নয়– গোটা রাজ্যজুড়ে আলুর ঘাটতি থাকায় উত্তরপ্রদেশ– মধ্যপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে আলু আমদানি করে এখানকার হিমঘরগুলিতে সংরক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানান পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির কর্ণধার লালু মুখোপাধ্যায়। ওইসব রাজ্যের আলু ৭৫০ টাকা দামের মধ্যে এখানকার হিমঘরে সংরক্ষণ হচ্ছে। এখানকার আলু প্রায় ৯৫০ টাকায় হিমঘরে সংরক্ষণ হচ্ছে।
ভিন রাজ্যের আলু আমদানি করে এ রাজ্যের হিমঘরে সংরক্ষণ করায় কৃষকরা ক্ষুব্ধ। আলুর জোগান বেড়ে গিয়ে এ রাজ্যে আলুর দাম কমে গেলে কৃষকরা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে অভিযোগ।