পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : আখলাক কাণ্ডের ছায়া এবার বিহারে। নীতীশ কুমারের রাজ্যে স্বঘোষিত গো-রক্ষকদের নিষ্ঠুরতা। পরিণতি বেঘোরে চলে এক নিরীহ তরতাজা মুসলিম যুবকের প্রাণ। পিটিয়ে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এমনকী আধপোড়া লাশ নুন দিয়ে মাটিতে পুতে দেওয়া হয় যাতে তাতে তাড়াতাড়ি পচন ধরতে পারে। গো-রক্ষকদের হাতে ওই মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যার একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকেই গোটা বিষয়টি সামনে আসে। সবথেকে বড় কথা নিহত ব্যক্তি রাজ্যের শাসক দল জেডিইউয়ের সক্রিয় কর্মী। তা সত্ত্বেও গো-রক্ষকদের হাত থেকে তিনি রেহাই পাননি। নিহত যুবকের নাম খলিল আলম (৩৪)। ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের সমস্তিপুর জেলায়। ১৯ ফেব্রুয়ারী নদীর পাড় থেকে খলিলের লাশ উদ্ধার হয়। সেখানে তাঁর লাশ বালিতে পুঁতে রাখা হয়েছিল।
অভিযোগ স্ব-ঘোষিত গো-রক্ষকরা পিটিয়ে হত্যা করে খলিলকে। হত্যার পর তাঁর লাশ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা হয়। তারপর আধপোড়া দেহটি লবনে মাখিয়ে পুঁতে ফেলা হয়েছিল যাতে সেটি তাড়াতড়ি পচে যায়। স্থানীয় কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টে উঠে এসেছে হত্যাকারী গো-রক্ষকরা প্রথমে খলিলের মৃতদেহটিতে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তারপর অর্ধ লাশটিতে লবন মাখিয়ে মাটিতে পুঁতে দেয়। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে দেখা যায় হামলকারীদের সামনে হাতজোড় করে রেহাই দেওয়ার জন্য কাতর আর্জি জানাচ্ছেন খলিল। ভিডিয়োতে উগ্র গো-রক্ষকদের মুখ দেখা না গেলেও বারবার তাদের খলিলকে উদ্দেশ্য করে বলা কথা গুলো স্পষ্ট শোনা গিয়েছে। সেখানে তারা খলিলকে তীব্র ধমকের সুরে বলছে ‘বল কোথায় কোথায় গরু জবেহ করেছিস? কোন জায়গায় এইসব করেছিস।
জীবনে কতগুলো গরুর মাংস খেয়েছিস? বাচ্চাদেরও গরুর মাংস খাওয়াস? গরুর মাংস বিক্রির সঙ্গে কারা জড়িত তাদের নাম বল?’ এছাড়াও খলিলকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে দেখা যায় হামলাকারীদের। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিহারের বিরোধী দলনেতা তথা আরজেডির তেজস্বী যাদব। মঙ্গলবার গভীর রাতে একটি হিন্দি চ্যানেলের ভিডিয়ো ক্লিপ শেয়ার করে ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন তিনি। রাজ্যের নীতীশ কুমার সরকারকে নিশানা করে তেজস্বী টু্ইট করেন ‘বিহারে এনডিএ সরকারের জমানায় আইন-শৃঙ্খলা পুরো ভেঙে পড়েছে। গো-রক্ষার নামে এক মুসলিম যুবককে একজন জেডিইউ নেতাকে পিটিয়ে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে।’ মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তাঁর প্রশ্নবাণ ‘নীতীশজি বিহারে কেন লাগাতার এই ধরনের ঘটনা ঘটছে? কেন মানুষ আইন নিজেদের হাতে তুলে নিচ্ছে?’