পুবের কলম প্রতিবেদক– দক্ষিণ ২৪ পরগনাঃ ‘পুবের কলম’ পত্রিকার খবরের জেরে শেষ পর্যন্ত আড়িয়াপাড়া ও নস্করপুর স্কুলে মুসলিম মেয়েরা হিজাব পরেই ক্লাস করতে পারছে। নিজেদের অনড় মনোভাব পরিবর্তন করেছেন কর্তৃপক্ষ। কর্নাটকে হঠাৎই দেখা যায় হিজাব পরে আসা মুসলিম মেয়েদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না স্কুলে ও কলেজে। নিন্দায় সোচ্চার হয় সুশীল সমাজ। এমনকী দেশের বাইরেও নিন্দার ঝড় ওঠে। মামলাটি পৌঁছয় কর্নাটক হাইকোর্টে। কর্নাটকের সংঘ পরিবারের হিজাব-বিরোধী উদ্যোগে আচমকা শামিল হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ২টি স্কুল। আড়িয়াপাড়া উচ্চমাধ্যমিক হাইস্কুল ও অন্যটি হল নস্করপুর সুকান্ত শিক্ষা নিকেতন। যে মুসলিম মেয়েরা হিজাব পরে বছরের পর বছর স্কুলে আসছিল– তাদেরকে সটান বলে দেয় হিজাব পরে স্কুলে আসা যাবে না। আড়িয়াপাড়া স্কুলের প্রধানশিক্ষক ও অন্যান্যরা হিজাবধারী ছাত্রীকে বলেন– হিজাব খুলে ফেলতে হবে। আর হিজবা যদি পরতেই হয় তাহলে তারা টিসি নিয়ে অন্য স্কুলে চলে যাক। কিংবা চলে যাক মাদ্রাসায়। স্বভাবতই স্কুল কর্তৃপক্ষের এই কথায় মুসলিম মেয়েরা বিশেষভাবে আহত হয়। যে স্কুলকে তারা নিজেদের বলে মনে করে সেই স্কুলই এখন বলছে– ‘মাদ্রাসায় চলে যা’। আর আড়িয়াপাড়া স্কুলের দেখাদেখি নস্করপুর সুকান্ত শিক্ষা নিকেতন থেকেও হিজাবধারী ছাত্রীদের একই ধরনের কথা বলা হয়। ইতিমধ্যে মুর্শিদাবাদের একটি স্কুলেও একই ধরনের ঘটনায় উত্তেজনা দেখা দেয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি ‘পুবের কলম’-এ প্রকাশিত হয়। এলাকার হিন্দু-মুসলিম সকলেই এতে ক্ষুব্ধ হয়। পুবের কলম পত্রিকায় খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও বলেন– আমাদের রাজ্যেও প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছিল। আমরা তা আমরা আটকে দিয়েছি। তিনি আরও বলেন– সব ধর্মের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। এখানে মানুষ শান্তি চায়। এখানে উসকানি যেমন আছে ভালোবাসাও আছে। তবে রাজ্যের মানুষ যে শান্তি ও সম্প্রীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল– তা প্রমাণিত হয়েছে। শেষপর্যন্ত আড়িয়াপাড়া উচ্চমাধ্যমিক হাইস্কুল এবং নস্করপুর সুকান্ত শিক্ষা নিকেতন কর্তৃপক্ষও বুঝতে পারেন– পশ্চিমবঙ্গে কর্নাটকের মতো হিজাব বন্ধের নিদান চলবে না। কর্তৃপক্ষ মুসলিম ছাত্রীদের বলেন– তোমরা আগের মতোই স্কুলে আস। কোনও সমস্যা হবে না। ফলে মুসলিম মেয়েরা হিজাব পরে স্কুলে যাচ্ছে। মুর্শিদাবাদ স্কুলটির কর্তৃপক্ষও ভুল বুঝতে পেরেছেন। পশ্চিমবঙ্গে হিজাব নিয়ে কোনও অশান্তি তৈরির চক্রান্ত সফল হয়নি।