পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ ভারতে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি পরিসংখ্যানের থেকে আট গুণ বেশি- দাবি বিশেষজ্ঞের।
ভারতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মোট ৫,১০,৪১৩ জন মারা গেছেন। কিন্তু বুধবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ভারতে কোভিড ১৯-এ মৃত্যুর হার সরকারি পরিসংখ্যানের চেয়ে ছয় থেকে আট গুণ বেশি। সমীক্ষায় অনুমান করা হয়েছে ২০২১ সালের নভেম্বরের শুরুতে কোভিডের কারণে ৩২ থেকে ৩৭ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেই সময়ে, রাজ্যগুলোর পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে, কেন্দ্রীয় সরকারের গণনা ছিল প্রায় ৪ লক্ষ ৬০ হাজার। এরপর থেকে সরকারি গণনায় তা বৃদ্ধি পেয়ে ৫,১০,৪১৩ জনে পৌঁছেছে।
ফ্রেঞ্চ রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপমেন্টের জনসংখ্যার বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফ গিলমোটো দেশব্যাপী মৃত্যুর সংখ্যা অনুমান করার জন্য কেরালার জনসংখ্যা, ভারতীয় রেলের কর্মচারী, বিধায়ক, এমপি এবং কর্ণাটকের স্কুল শিক্ষকদের উপরে গবেষণা পরিচালনা করেছেন।
এ সংক্রান্ত অনুমান যদি সত্যি হয়, তাহলে ভারতই হবে সর্বোচ্চ মৃত্যুহারের দেশ। যা এপর্যন্ত আমেরিকাতে প্রায় ৮ লক্ষ এবং ব্রাজিলে ৬ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর চেয়ে বেশি হবে। বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা বর্তমান ৫.৮ মিলিয়নের চেয়ে বেশি হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমিউনিটি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘বিভিন্ন তথ্য সূত্রে যে চিত্রটি উঠে আসছে তা একইরকম। এবং এটি ইঙ্গিত দেয় যে আমাদের মৃত্যুর পরিসংখ্যান সংশোধন করা দরকার।’
গিলমোটো তার প্রতিবেদনে ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত কেরালা থেকে পাওয়া ২৬ হাজার ৬২৮ টি কোভিড-১৯ মৃত্যু অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এই রিপোর্ট অনুসারে, ভারতের ৫ হাজার ৮৩৭ জন বিধায়ক ও সাংসদের মধ্যে ৪৩ জন, ভারতীয় রেল কর্মচারীদের মধ্যে ১,৯৫২ জন এবং কর্ণাটকে ২৬৮ জন স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারি চলাকালীন ভারতে কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। বিশেষকরে ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের এপ্রিলের মধ্যে পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন এবং ২০২১ সালের এপ্রিলে উত্তর প্রদেশে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বেড়েছে। বিশেষজ্ঞ বলেন, ভারতে প্রতি বছর বিভিন্ন কারণে প্রায় ৯০ লক্ষ মানুষ মারা যায়। আদমশুমারি বা পারিবারিক জরিপের মাধ্যমে এর সঠিক তথ্য পাওয়া সম্ভব।