লখনউঃ শ্রীরামচন্দ্রের পর এখন উত্তরপ্রদেশের ভোটরঙ্গে শ্রীকৃষ্ণ এখন দুর্দান্ত ফর্মে অবস্থান করছেন।‘শ্রীকৃষ্ণ কার?’ তা নিয়ে এখন বিজেপি, সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেসে জোর তরজা হচ্ছে।ভোটের প্রচার শুরু হতেই বিজেপির পক্ষ থেকে মথুরায় অযোধ্যার মতো বড় মন্দির তৈরি করার প্রতিশ্রুতি হাওয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।ইতিমধ্যে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের তরফে আদালতে মামলা করে দাবি করা হয়েছে, ‘আওরঙ্গজেব স্থাপিত মথুরার শাহি ঈদগাহ মসজিদের স্থানেই প্রকৃতপক্ষে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল’।মথুরায় যেখানে শ্রীকৃষ্ণের মন্দির রয়েছে, তার পাশেই এই ঈদগাহ মসজিদ। তাই ওই মসজিদ সরিয়ে সেখানেই বড় শ্রীকৃষ্ণের মন্দির তৈরি করতে চায় বিজেপির এক বড় অংশ।দু’দিন আগে সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব, যার বড় ভরসা রাজ্যের মুসলিমরা, জনসভায় বলেছেন, ‘প্রভু শ্রীকৃষ্ণ প্রতি রাতে আমায় স্বপ্নে দেখা দেন, দেখা দিয়ে বলেন, ‘তুমিই এবার উত্তরপ্রদেশে প্রকৃত রামরাজ্য প্রতিষ্ঠা করবে’। মুখ্যমন্ত্রী যোগি আদিত্যনাথকে অখিলেশ ‘ভুয়ো গেরুয়াধারী’ বলে তোপ দাগে্ন।অখিলেশের মুখে এমন কথা শুনে যোগি আদিত্যনাথ বিশাল ক্ষেপে গিয়েছেন।তাঁর ব্র্যাণ্ডে নাক গলিয়েছেন অখিলেশ? এত বড় স্পর্দ্ধা! আদিত্যনাথ পাল্টা বলেছেন, ‘শ্রীকৃষ্ণ অখিলেশকে স্বপ্নে দেখা দেবেন? একেবারে ঝুটা বাত। অখিলেশ মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মথুরার জন্য কিচ্ছু করেননি। কী করে করবেন? ওঁরা তো কংসের পূজারী।কংসের পূজারী না হলে ২০১৬ সালে মথুরার ধর্মীয় নেতা রামবৃক্ষ যাদবের সমর্থকদের ২৯ জনকে অখিলেশের পুলিশ গুলি করে হত্যা করে? আলিগড়ে এক বিদ্যুৎপ্রকল্পের উদ্বোধন করে আদিত্যনাথ বলেন, ‘আমি যখন এই উদ্বোধন করছি তখন একজন লখনউতে স্বপ্ন দেখছেন। সত্যিই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ওদের স্বপ্নে দেখা দেবেন। দিয়ে বলবেন, ‘তোমরা নিজেদের ব্যর্থতার জন্য বরং চোখের জল ফেল।বিজেপি সরকার যে কাজ করছে তা কখনও তোমরা করতে পারবে না। তোমরা ক্ষমতায় থাকাকালীন মথুরা, বৃন্দাবন, গোকুল, বলদেও এবং বারসানার জন্য কিছু করনি কেন?কারণ তোমরা কংসকে ভালোবাসো, আমাকে নয়’। উত্তরপ্রদেশের ডেপুটি স্পিকার নিতিন আগরওয়াল বলেছেন, ‘যদি বিজেপি সরকার মথুরায় শ্রীকৃষ্ণ মন্দির না গড়ে তবে কি তা লাহোরে গড়ে দেবে কেউ? শ্রীকৃষ্ণ যে বাঁশি বাজাতেন তা উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে।অখিলেশ কখনও এসব নিয়ে ভেবেছেন?’অন্যদিকে কংগ্রেসের নেতা প্রদীপ মাথুর বলেছেন, ‘আদিত্যনাথ, অখিলেশ শ্রীকৃষ্ণের অনুগামী হতে পারেন, কিন্তু ব্রজবাসী বা বৃন্দাবনবাসী না হলে শ্রীকৃষ্ণের মন্দির গড়ার অধিকার থাকে না। আমিই একমাত্র ব্রজবাসী। সে অধিকার আমারই আছে’।অন্যদিকে রামসেবা ট্রাস্টের আহ্বায়ক আশুতোষ বরশনি বলেছেন, ‘বিষ্ণুর সপ্তম অবতার রামচন্দ্র, তিনি ত্রেতা যুগে এসেছিলেন।শ্রীকৃষ্ণ হলেন বিষ্ণুর অষ্টম অবতার, তিনি দ্বাপর যুগে এসেছিলেন।তাই শ্রীরামচন্দ্রের পর শ্রীকৃষ্ণ নিয়ে মাতামাতি হওয়াই তো স্বাভাবিক’।রোটি–কাপড়া–মকান বাদ দিয়ে এখন এই সব বিষয় নিয়েই মেতে উত্তরপ্রদেশের নেতারা।